তবুও জীবনের হিসেব মেলে না কিছুতেই
ফরেস্ট গাম্প' থেকে 'হাজার বছর ধরে'; 'অক্টোবর স্কাই' থেকে 'পুতুল নাচের ইতিকথা'; 'রেইন ম্যান' থেকে 'শঙ্খনীল কারাগার' এই বিশেষ সিনেমাগুলোয়, গল্পে, উপন্যাসে কাহিনী, চরিত্র, ঘটনাপ্রবাহ সব কিছু পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত মানুষের মনে যেটা গেঁথে যায় তা হল 'জীবনবোধ'।
সিনেমার কোন দৃশ্য নয়, গল্পের কোন অংশ নয়, বরং পুরোটা শেষ করার পর মানুষ কিছুক্ষণ চুপ হয়ে যায়, এক মুহুর্ত তার মনে কিছু আসে না; জাগতিক প্রাপ্তি শুন্য মনে হয়, সবশেষে মনে আসে, জীবন কি? সম্ভবত এই প্রশ্নটাই জীবনবোধ।
এই অনুভূতি সবার মধ্যে এক, সমাজের উঁচু-নিচু তলার লোক, কবি থেকে সৈনিক সবার জন্য সমান। হাজার বছর ধরে'র শেষ পৃষ্ঠায় অথবা ফরেস্ট এর সে ডায়ালগ, "হোয়াই ডোন্ট ইউ লাভ মি জেনি? আই এম নট এ স্মার্ট ম্যান, বাট আই নো হোয়াট লাভ ইজ" মানুষকে একই ভাবে কষ্ট দেবে।
মানুষ কষ্টকে ঘৃণা করে, আবার কষ্ট পেতেই ভালোবাসে বিভিন্ন ভাবে, সম্ভবত জীবনের বড় সময় এই দু:খের সাথে মানিয়ে চলতে হয় বলে। ট্র্যাজিডিগুলো ই মহাকাব্য হিসেবে বিখ্যাত হয়ে আছে, আর সবার মধ্যেই দু:খ ব্যাপারটা প্রবল।
মানুষ তাই চাঁদ দেখে, আর রাত দেখে চুপ হয়ে যায়। সবচেয়ে সফল মানুষের মধ্যেও এক একসময় সব অর্থহীন লাগে, মনে হয় জীবনের কোন মানে নেই।
আমাদের পৃথিবীটা প্রতিদিন পালটে যাচ্ছে, আশেপাশের মানুষ থেকে সমাজ বাদ যায়নি কিছুই। কিন্তু সেই চার হাজার বছর আগে পিরামিডের পাথর বয়ে নেওয়া শ্রমিক থেকে পাঁচ প্রজন্ম পদ্মায় নৌকা বেয়ে চলা মাঝি; সবাই একই ভাবে কষ্ট পায়। বৃষ্টি দেখে সবাই একইভাবে উল্লসিত হয়। অনুভূতি ঠিকঠাক আছে, পালটে যাচ্ছে মানুষ।
একটা ঠিকানা, কিছু অর্থের জন্য সবাই দৌড়ায়, পরিবার পরিবারকে ভুলে যায়, মানুষ মানুষকে ভুলে যায়। তবুও চৌরাস্তার মোড়ে বিভ্রান্ত পথিকের মত হঠাৎ তারা জীবন নিয়ে বিভ্রান্ত হয়। আধুনিকতার গেঁড়াকলে সব মানুষ এক একটা ক্যালকুলেটর হয়ে উঠেছে ঠিকই, তবুও জীবনের হিসেব মেলেনা কিছুতেই...
0 comments