• Home
  • About
  • Contact
    • Category
    • Category
    • Category
  • Shop
  • Advertise

Banggle.Info

facebook google twitter tumblr instagram linkedin
এভাবেই ফেলা বিনের জগত ধূসর আঁধারে যখন নিলাম হয়। তখন চারিদিকে নিভে যায় ল্যাম্পপোস্টের হলুদ বাতি গুলো। কেউ নেয় না কারো খোঁজ আজ কে কোথায় হারালো। রঙিন জীবন সাদাটে হয়; নিকষকালো শহরে তখন এই শহর প্রাণের শহর শুধু নিজ জীবনের দ্বারে।  সারাজীবন, পথ হাঁটতে হাঁটতে তো অমনি অনেক পথের মুখে দাঁড়িয়েছি তীরসন্ধ্যায়- যেখানে দু'পথ গেছে দুইদিকে। কোন পথে যাব? কোন পথপ্রান্তে আছে আমার অমলধবল দুধসাদা বিছানা নিয়ে একখানা বাড়ি? পথের ক্লান্তি শেষে একটুখানি ঘুমাবো। শেষ পর্যন্ত একটি পথকে বেছে নিতে হয়েছে। কিন্তু মন তো গেছে সেই পথেও, যে পথ হয়নি বেছে নেয়া। না, জীবনের কিছু বেছে নেয়া পথই আমাকে শেষ পর্যন্ত নিশ্চিত গন্তব্যে পেঁৗছে দেয়নি। কেননা, প্রতিটি সময়ই ভেবেছি, ওই ফেলে আসা পথটিও হয়তো আমাকে অন্যতর একটি গন্তব্যে নিয়ে যেত। তাই সর্বদা ভাবি এই মনে, তুই ফেলে এসেছিস কারে, মন, মনরে আমার।
ফেলে তো অনেককেই এসেছে। পথে পথে। কাবেরিকে, আদৃতাকে, লাকীকে। কাউকে হারিয়ে ফেলেছি পথে। হারিয়ে গেছে। যেন রে রে করে রক্তজবা চোখের কারা তাকে কেড়ে নিয়ে গেছে জোড়া দিঘির ঘাটে। এমনও তো ঘটেছে এ জীবনে। কিন্তু তারা সত্যই হারায়ে গেছে? না। তারা, সে সব না নেয়া, না পাওয়া, হারায়ে যাওয়া পথ আর মানুষ সকলই আছে, বেশি, করে আছে এই মনে। আমি তো তাদের বহন করে চলেছি জীবন্ত অথবা কবরসমেত।

আমার স্কুলবেলার সে দিনগুলো তো অখনেও স্পষ্ট মনে আছে। দুইবেণী দুলিয়ে, গোলাপিজামা পরে দুইবোন আসতো পাশের মির্তিঙ্গা চাবাগান হতে। কী নাম ছিল তাদের? জানা হয় নাই। তারা বসত একই সাথে। আমি মুগ্ধ বালক চেয়ে দেখি তাদের মুখপানে, পাঠের পড়া ভুলে। কাকে যে ভালো লাগে। তারপর তারা একদিন হঠাৎ হাওয়া হয়ে গেল।
সম্ভবত অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময়ই কবি রোগে আক্রান্ত হই। আমার ধ্যানজ্ঞান হয়ে উঠতে থাকে কবিতা। আমার পড়ার বিষয় হয়ে উঠতে থাকে কলা বিষয়ক বিষয়গুলি। কিন্তু নবম শ্রেণিতে উঠার পরই শিক্ষকরা বললেন, যাদের রোল দশের মধ্যে তাদের সবাইকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে হবে। ফলত আমার মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াল গণিত, উচ্চতর গণিত। তার এলজেব্রাগুলো জেব্রার মত আমার চোখের সামনে ঘোরাফেরা করত তখন কেবলই মনে হত আহা, আমার বন্ধুরা না জানি কত আনন্দ নিয়া সাবলকি গল্পগুলান পড়তেছে! আর আমাকে শিখতে হচ্ছে গণিতের তো বটেই রসায়নের রসহীন সূত্র সমীকরণ। এই রসহীন রসায়ন, গণিত, পদার্থ নিয়া এসএসসি বৈতরণী ভালোভাবেই পাস করার পর শুরু হলো নতুন দ্বিধার ধাঁধা।

অনেক কিছুই ভুলে গেছি, হারিয়েছি তার থেকেও বেশি; হারিয়েছি ছেলেবেলার বৃষ্টি, হারিয়ে গেছে তেপান্তরের মাঠ, আজও বৃষ্টিরা একা একা পায়ে হেটে বাড়ি ফেরে; গতকাল নদী’টাও ফিরে গেছে তার কিশোরী বেলায়; আমি এখনও বসে আছি তোর ফেলে যাওয়া পথে।
ছোঁয়াছুঁয়ি-কানামাছি, কুমির ডাঙ্গা বিকেল। কত দিন হয়ে গেল, খেলি না। দূর থেকে ডাক আসে ঝিরঝির জলনদী মেঘেদের, আয় তুই, আজ ভিজে যাই দুজনেই। বৃষ্টিরা বড়বেশি আপন আমার। আর কারো সাথে তার ভাগ নেই। এইটুকু, এই সব ফোঁটা ফোঁটা জল-আদর শুধু থাক তোর আর আমারই। এই স্নিগ্ধ সকাল থেকে গাঢ় নীল সন্ধ্যেতে আলো মেখে, ভালো থাক।

প্রায়ই ভাবি কেউ চলে গেলে হয়ত কিছু একটা বদল হয়, আপন ইচ্ছায় জলাঞ্জলি দেয় ভিতরের সব না বলা কথা । সাজানো কুড়েঘরের সেই বধুয়া বারান্দায় এক চিলতে উল্লাসী টেউ নিরন্তর বয়ে চলে আঁচল ঢাকা মুখখানির হাটুজল স্মৃতি নিয়ে । কেউ চলে গেলে হয়ত কিছু একটা বদল হয়, আগের মত করে হাতছানি দিয়ে ডাকেনা আর আমাদের সেই পুরানো সুন্দরী সুখগুলো ।

তারপর একটা কেউটের মতো রাত্রি আসে।আমি অনেক পুরনো মুখ খুঁজি আজকাল, অথবা একটি নতুন মুখে প্রাচীন সুখ।বাসায় ফেরে আমার মধ্যে জেগে থাকা ‘মা’।মৃত্যুর কথা ভাবি,জীবনের কথা ভাবি,তারপর ভাবি এসব শ্যাওলা মাখা শরীর নিয়ে কতদিন পাল্লা দেবো? ভাবি কতদিন সিঁড়ির ঘরে লুকিয়ে রাখবো ভালোবাসার বোধগুলোকে,বলবো বৃষ্টি,চল একবার সস্তা পালিয়ে যাই।জামাকাপড় বিশেষ লাগবে না খালি কতগুলো বই যদি সঙ্গে নিতিস…। ভালবেসে কি পাবো?অভিযোগ?শরীর?আমি তো সেসব চাই নি কোনদিনও।একটা ছাদ-মানুষ,তারা,বোধ,চোখের জলে ভিজিয়ে দেওয়া ক্ষত,বোবা আদর।কাল রাতে জীবনানন্দ এসেছিলেন,বলছিলাম-আমি একটা কাগুজে বাঘ সেজে হেঁটে চলেছি শব্দের উপর দিয়ে মহাকালের পথে, বলছিলাম-আমার ঘুমের মধ্যে মরে যেতে ভয় লাগে,একা।
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

এখন আর তোর জন্য দুম করে কিছু লিখতে পারি না আগের মতন। এখন আর তোর জন্য ফ্যাঁচ ফ্যাঁচ কত্তে পারি না আগের মতন। এখনও মন খারাপ হয়, কিন্তু মন কেমন থাকে না আগের মতন। কিন্তু আজ হঠাত্ই অন্ধকারের বৃষ্টি হঠাত্ বৃষ্টি, আগের মতন। সেই রকম ভেজা ভেজা, মনকেমনের গন্ধওয়ালা, একনাগারে টুপটাপ, ঠিক তোর মতন। এক্কেবারে তোরই মতন।
অফিস থেকে ফেরার পথে আজ বৃষ্টি ভিজলাম খুব। আগের মতোই। অনেকদিন পর। আমার চোখে মুখে বৃষ্টির বড় বড় ফোঁটা, শান্ত ভাবে দাঁড়ালে মনে হয়, পিয়ানোর রিডে কারোর আঙুল বোলানোর মতো, আমার চোখে মুখে টিপটিপ সুর তুলছে কেউ। এলোমেলো, কিন্তু সুন্দর।
বৃষ্টি পড়লেই শক্তির একটা লাইন বার বার মনে পড়ে আমার। প্রথম যা শুনেছিলাম, তিতলি সিনেমাটায়। পেয়েও না পাওয়ার একটা মুহূর্তে অপর্ণা সেনের গলায়, অদ্ভুত মনখারাপিয়া সে লাইন, একটাই লাইন, তাতে যেন আমার বৃষ্টি মন খারাপের সবকিছু সাজানো গোছানো অদ্ভুত ভাবে,
“এখানে বৃষ্টি পড়ে বারো মাস, এখানে মেঘ গাভীর মতো চড়ে, পরাঙমুখ সবুজ নালীঘাস, দুয়ার চেপে ধরে”।
দেখছিস, লিখতে লিখতে আরও ঝেঁপ্পে বৃষ্টি। আচ্ছা? তোর ওখানেও কি একইরকম বৃষ্টি পড়ছে আজ, এই মুহূর্তে? কি করছিস তুই? ঘুমোচ্ছিস? নাকি কথা বলছিস অন্য কারো সাথে? নাকি আমার মতোই মনকেমন তোর? কে জানে..
আমার ঘরের খোলা জানলা দিয়ে আলো ছিটকে পড়েছে বাইরের অন্ধকারে। আমার কার্নিস বেয়ে টুপটাপ জল, পড়ার আগে মাঝপথে, চোখে ধরা দিচ্ছে ঘরের আলো লেগে।  চকচক করে উঠছে সে সব একলা অন্ধকারের মধ্যেও। আর আসছে শব্দ। ছাদের পাইপ বেয়ে বৃষ্টি জল পড়ার শব্দ। ঝেঁপে বৃষ্টির ঝমঝম শব্দ। একভাবে সে শব্দে নিজেকে সঁপে দিলে মনে হয়, জীবনের শেষ কিছু মুহূর্তে, শেষতম শব্দ এসব। এরপরেই গলে যাব, ভেসে যাব আমি। রাস্তার নোংরা জলে হবে আমার শেষকৃত্য। ভুত হয়ে থেকে যাব জমা জলে, কবে তোর পা ভেজাব, মুক্তি আমার সে সময়েই।
“আমার সর্ব অঙ্গে জল, সর্ব অঙ্গ ভেজা হবে
এই বৃষ্টি শেষে আমার তোমার সঙ্গে দেখা হবে..”
আমার ঘরের সামনের ছাদের পাঁচিলে সার সার টব। তাতে ফুল, কিছু গাছ। আপাদমস্তক ভিজবে ওরা সারারাত। ওদের বলি, আমার হয়ে খানিকটা বৃষ্টি ভিজে নিতে। বৃষ্টি হলে চারপাশে কিরকম আলো আলো হয়ে যায় দেখেছিস কখনও ভালো করে? তোর মুখে সেই আলো দেখতাম। আজ সেই আলোতে তোকে দেখলাম। আগের মতোই আছিস। একইরকম।
“আমি বৃষ্টি ভালোবাসি, তাই মেঘের কাছে ফিরে ফিরে আসি,
আমি বৃষ্টি জলে শুদ্ধ হতে চাই, আমি তোমার প্রেমে শুদ্ধ হতে চাই”
আবার কখনও এভাবেই বৃষ্টি নামবে একদিন। ভেজা রাস্তায়, জংলা গাছের ভিড়ে এক্কেবারে একলা থাকব দুজন। বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বৃষ্টি মানুষ হওয়ার আগে জাপটে ধরবো তোকে। আদরে আদরে বৃষ্টি মাখব জিভে। তোকে বৃষ্টি চুমু খাব। প্রাণপনে..
চুমুর দিব্যি আমার, তোকে বৃষ্টি চুমু খাবো….


Share
Tweet
Pin
Share
No comments
বিকেল ফুরায়, কেউ তো এসো সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালো... আমিও তো কাঁদতে জানি বাসতে জানি ভালো!

ভালবাসার শীর্ষ বিন্দু জয় করার সাধ ছিল, তাই তো তোমাকে জড়িয়ে ধরা, তোমার ভালবাসা ছিল বটবৃক্ষ, আমারটা ছিল লতা। হেমন্তের এই নির্জন সাঁঝবেলায় কী যে হয়! খুব আনমনা লাগে। অতীতের কোনো এক শৈশব-কৈশোরের সাঁঝবেলার স্বপ্ন এসে আমায় আচ্ছন্ন করে। সেসব স্বপ্ন যার কিছুই জীবনে সত্যি হয়ে আসেনি। জীবনের অনেক অনেক দিনের পরিভ্রমণ শেষে সেই স্বপ্নের মাঝে কেমন বিষণ্ণতা ভর করেছে! হেমন্তের জোছনাভেজা রাত অচেনা জগতের সেই হাতছানি হয়ে কী এক মরীচিকার খেলা হয়ে দীর্ঘশ্বাসকে নিরাসক্ত করে তোলে।
নদীর অন্য প্রান্তে চাঁদের আলোয় মায়ার কুহেলিকা। সেদিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে চোখ অশ্রুতে ভরে উঠে। 

চাঁদটা এখনও রহস্যময়, যেন কানে কানে সে কিছু বলতে চায়। কিন্তু শেষরাতের জোছনায় লুকানো কুহেলিকার চেয়েও এক রহস্যময় দৃশ্য দেখি।  আহা, মৌরি, তুমি এলে এমন সময়, যখন আমার মনে হলো, এই পৃথিবীর সব জঞ্জাল পায়ে ঠেলে আমি একটা সুরের পাখি হয়ে যেতে চাই। যে ভালোবাসাকে নেওয়ার জন্য এই সমাজ প্রস্তুত নয়, তাকে মহার্ঘ্য ভাবার অপরাধে, আমার মৌরি; আমি তোমার কাছ থেকেও পালাতে চাই।
অনন্ত জীবনকে আস্বাদের জন্য নদীর পাড়ের ঝোপঝাড়টা মোক্ষম একটা জায়গা। চাঁদের আলোয় কত ছায়া সেখানে ঘোরাফেরা করে! আমার সাংকেতিক স্নায়ুতন্ত্র আমাকে বলে; ছায়াগুলো অনন্ত পরমায়ুপ্রাপ্ত।

বেহায়া বাতাস আমার পিছু ছাড়ে না। পাপ স্পর্শ করে না চোখের পাতা। এমন পৃথিবীতে ঘুম আসে না- মৃত্যু আসে না। দুঃখের দেয়াল ধাক্কা মারে-; পৃথিবীর বুকে ঘুট-ঘুটে অন্ধকার  নিয়ে অনিচ্ছায় শুয়ে থাকি কত কত বছর; জলপ্রণয়ী পাখিসাঁতারও ভালো লাগে না; লাঙলের ঘষা খাওয়া রেখাহীন হাত দেখে দেখে  মানুষ-জন্ম ভুলে  যাই।

এই জনপদে তুই ছাড়া আর কোনো নদী নেই ও কুমারী নদী দোয়েলা আমার, তুই কি জানিস, তোর চোখে ঘুমায় বৃষ্টিমাসী সকাল, ইমনরাগে সন্ধ্যা জাগে কণ্ঠে তোর। আর আমি দুলে উঠি অন্ধ জোছনায়। জান তো এই সমতলে জন্মে না দ্রাক্ষার ফুল কিংবা ন্যাংটা আঙুর। দীর্ঘ রাত্তির নেমে এলে তুই গেঁথে থাকিস পতঙ্গ শিকারী ফুলের লালায়। যখন রাত্তির নেমে আসে জংলাপাখির ঝরা পালকের লোমকূপে, রুক্ষ বনের খেয়ালী একটা বৃক্ষ হেঁটে যায় দূর চন্দ্রালোকে, মৃত নগরের ছবি বেনামী চিঠির খামে ভেসে আসে অদৃশ্য রাত্রির উড়ন্ত পাখায়। বাংলার অন্তঃপুরে ধুতরার চাষ। অন্ধ গলিতে তার ছেঁড়া দোতরার বর্ণহীন সুর এখানে ধূলায় গড়ায় সাধারণ মানুষের শব। অচল আধুলির দামে আমাদের অন্তঃপুরে বৈধব্য-সন্ধ্যা নামে, গুমোট হাওয়া, চিমনির ধোঁয়া-ভরা রাত নীরব পাঁচালি লেখে ইটের ভাটায়।

যখন রাত্তির নেমে আসে আমাদের নীলাচল পাহাড়ে, তারাবাতি কথা বলে ইলোরা জোছনায়, তুই দোয়েলা বরফ আগুনে পুড়ে মরো সাধনার ফেরে, জোড়াহীন দোয়েলা আমার, সাধনা জানো না বলে তলিয়ে যাচ্ছো ঘুমনদী-জলে। যকৃত ছিইড়া খায় নতুন ঈগল, পুড়তে চাই, পোড়ে না- তৃষ্ণা মেটে না যার আরব সাগরের সমস্ত জলে, সেই আমি সন্ধায় গোধূলিরে পাখির ডানায় বেঁধে তারাদের স্নান শেষে- দিয়াছি উড়াল... 
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
জানি সব শেষ হয়ে গেছে অথবা হয়নি শুরু কিছু, জীবনের নিরর্থকতা প্রেমহীন থেকে অর্থবহ হয় শুধু; তবু তহবিলে গচ্ছিত রাখি সব স্মৃতি, বিদগ্ধ জোনাক --কালো রাত শেষ, আবার শুরু হবে নতুন প্রেমের সকাল ।
মনের ভাব প্রকাশে আমি বরাবরই অক্ষম,তা তুমি ভালো করেই জানো। অথচ সে দিন কাশবনে লাল ফ্রকের এক বালিকার উচ্ছাসিত হাসির যে পবিত্রতা দেখেছিলাম তা তোমাকে বোঝাতেই পারি নি।
তুমি হেসেছিলে খুব। আসলে ওই হাসির পবিত্রতাটাই সত্য, তোমার আমার ক্যাফেতে বসে থাকায় তা নেই। হয়তো,হয়তো তোমার চোখের কৃত্রিম কাজল রেখাতেও নেই, নেই আমার শব্দের উপস্থাপনায়
জড়িয়ে রাখার চেষ্টাতেও।
আমার স্মৃতিময় শহর; আমার স্বপ্নালু চোখে এঁকে দিয়ে গেছে কত শত স্বপ্নের আঁকিবুঁকি।
কত কত পাওয়া, না পাওয়ার উপকাহিনী। বহুকাল ধরে ঐ চিলেকোঠার ধুলোজমা দেরাজে পড়ে আছে ছেঁড়া ঘুড়ি, নাটাইয়ের জীর্ণ সুতো। সেখানে এখনো স্বেচ্ছায় বন্দী আমার কৈশোর।



তাকে তবে সেখানেই থাকতে দাও। শাদা-শরত আকাশের নিচে, ছাদের রেলিং ধরে হাঁটতে হাঁটতে
বেড়ে উঠেছে আমার চিন্তারা। হয়তো সেখানে এখনো হাঁটছে তারা, কোন এক চৈতালি ভরা জোছনায়।
নিঃসঙ্গ রাখালের বাঁশির মতো গুমরে গুমরে কাঁদছে আমার ফেলে আসা ভালোবাসা, বাতাসে উড়তে থাকা তার চুল, গোলাপি ওড়না। উদাসী বিকেল আর হিরণ্ময় দুপুরের মায়ায় বাকিটা জীবন সেখানেই থাকুক তারা। বিশ্বদা’র দোকানে এখনো লুকিয়ে আছে আমার স্কুল ফাঁকির ঘণ্টাগুলো, সিগারেটের ফিল্টারে প্রথম টান, লাল চোখ আর দমকা কাশি। অপরাধী’র মতন মুখ করে সেখানেই লুকিয়ে থাকতে চায় তারা। তবে তারা সেখানেই থাকুক, তারপর নিমেষেই ভুলে যাক আর সব। সিক্ত নীলাম্বরীর মতো ভিজে সারা হোক অঝোর শ্রাবণে।

জানিনা কতটুকু সময় পার হলে অপেক্ষা খুব ভারী মনে হয়। দুচোখের পাতায় নেমে আসে ভোরের শিশির। ভালোলাগা,ভালোবাসা শব্দগুলোর কাছাকাছি যতগুলো আপন শব্দাবলী তোমাকে দেবার কথা ছিলো , সবগুলো জমিয়ে রাখি। কে জানে যদি আর না আসো যদি জীবনের একটু দেখা হওয়া আলো হয়ে জুড়ে থাকে মনের আকাশ। যদি তুমি আমার আকাশ সীমায় মেঘ হয়ে আসো খুব, বৃষ্টি হয়ে ঝরো একদিন। আমি না হয় সেই বৃষ্টিতে ভিজে হবো স্নিগ্ধ সকাল।
বৈশাখের দিন গুলোতে যখন শুনশান দুপুরগুলো দীর্ঘ হতে থাকে কেবলি ধূসর হতে থাকি। তোমার বাড়ীর ছাদ থেকে আমার আঙিনা । এক্কা দোক্কা খেলা। বাতাবী লেবুর গাছটার ছায়ায়। দুপুরের আকাশ দেখার ফাঁকে কখনো? চোখ কি আমাতে ছিলো? কে জানে বাতাবী লেবুর গন্ধ মেখে কখনো কি আমি ও তোমার দিকে?
এই বৈশাখে তোমাকে যদি কাছে পাই। খুব কাছে পাই একদিন, মনে ভাবি। এখনো সেই গন্ধময়্তা জুড়ে থাকে। শুধু অস্পষ্ট তোমার চোখ, দেখা হলো না কোনদিন। এভাবে পিছন ফিরে থাকো যদি
আকাশের দীর্ঘ মেঘের পথ হয়ে।
কখনো পাওয়া হবেনা সেই তারাকে যার খুব কাছে বসবাস ছিলো একদিন।  বৈশাখ এলে এইকথাটা ভাবনার ঘুঘু হয়ে ডাকতে থাকে সকাল দুপুর রাত।




কান্না পাচ্ছে? কাঁদো, মন ভরে কাঁদো, কালো মেঘের চেয়ে বৃষ্টি ভালো। জৈষ্ঠের খাঁ খাঁ মাঠে বৃষ্টি র বড় দরকার। কাঁদো, সময় এখন ডুকরে ওঠা কান্নার। জানি বিচিত্র ফসল ফলে তোমার  নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে। সাধনার জমিজমা তোমার, বহু প্রানের জীবিকা। তোমার সচ্ছলতার পলপুঞ্জে পড়ে বাজারির চোখ, দামাদামি করে শুধু তারা, মায়া বোঝেনা। তবুও তোমার পুঁজির লোভ, নাও দরদামে হেরে যাও অভিঞ্জ বাজারির কাছে। এইসব দরদাম, হারজিত ভুলে যাওয়া সহজ, তবু মৌসুমী শেষে জৈষ্ঠের শূন্য মাঠ দেখে  যদি ভর করে পুরোনো দিনের কোনো আবেগ, যদি পুরো আকাশ কালো হয় মেঘে মেঘে
জানি, ভীষন  কান্না পাবে তোমার,
তুমি কাঁদবে।
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
আমি চলে যাবো
পড়ন্ত বিকেলের এই রোদ ছেড়ে।
এই পুকুর, মাছ, মাছরাঙা,
আম, জাম, গাব আর
সুপুরীগাছ গুলোও পড়ে থাকবে।

পুকুরের জলে তখনও বিকেলের রোদ এসে খেলা করবে, আর
খুঁজবে আমাকে।
আমারও খুব মনখারাপ করবে।
তবুও বনচাড়ালের পাতারা নেচে চলবে
তার নিজের খেয়ালে।




পৃথিবীর আর পাঁচটা কাজকর্মও
একই থাকবে।
জামরুল গাছে জামরুল হবে, আর
পাখিরা খাবে এবং নষ্ঠ হবে।
কেউ আর উঠবে না জামরুল গাছে।

জামরুল গাছ, তোমার মনখারাপ হবে?




Share
Tweet
Pin
Share
No comments
আমিও তো একদিন এরকমই কোনও এক বাড়ির ভিতরে বারবার ঢুকতে চেয়েছি, শুধু সময় পেরিয়ে গেছে বলেই তুলসীমঞ্চে প্রণাম পড়েনি, নতুন বউয়ের শাঁখে ফুটে ওঠে অন্য কোনও ঈশ্বরের নাম...সে এক রূপকথার গল্প, টাইম মেশিনে বসে আবার যদি কৈশোরকালে ফিরে যেতে পারতাম তাহলে আমি নিজের অতীত জীবনের বেশ কিছু ভুল-ভ্রান্তি শুধরে নিতাম। শচীন-সৌরভের খেলা আর সুমন-নচিকেতার গান শুনতে শুনতে বেশ বড় হচ্ছিলাম কিন্তু গোল বাঁধালো ওই মেট্রো চ্যানেল। তখন সবে শুরু হয়েছে, আর আমি “সুপারহিট মুকাবিলা” তে দেখছি মাধুরীর খোলা পিঠ, ভুবনমোহিনী হাসির হাতছানিতে তিনি আমাকে বলছেন, “হাম আপকে হ্যায় কৌন?” কেমন একটা ঘোর লেগে গেছিলো, সর্বক্ষণ রণে-বনে-জলে-জঙ্গলে শুধুই মাধুরী, মাধুরী আর মাধুরী। হুসেন সাহেবের তবু ফিদা হওয়া মানায়, কিন্তু আমার তখন ভালো করে অঙ্ক করার বয়স, মাধুরী জ্বরে কুপোকাত না হয়ে যদি আরো মন দিয়ে পড়াশোনাটা করতাম….

সেই সময়টাই ছিলো আমাদের বয়:সন্ধিকালে প্রেমে পড়ার সময়। বাতাসে তখন ছড়িয়ে থাকতো চোখাচোখি মুগ্ধতা। হৃদয়ে অবাধ্য ছেলে-মেয়েদের মনে হঠাৎ করে কালবৈশাখী আসত আর তখনই নচিকেতা গান ধরতেন, “হাজার কবিতা, বেকার সবই তা, তার কথা কেউ বলে না….” । আমরা নীলাঞ্জনাকে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াতাম পাড়ায় পাড়ায়, স্কুলে স্কুলে, অলিতে গলিতে, সাইকেলে রিক্সায়, টিউশনে, বইয়ের পাতায়, কবিতার খাতায়, সরস্বতী পূজোয় অঞ্জলী দেবার সময়। তখন আমাদের কাছে সেলফোন ছিলো না, ফেসবুক-টুইটার ছিলো না, হোয়াটস্‌ আপ ছিলো না কিন্তু চোখে চোখে কথা বলার সময় ছিলো, বইয়ের মধ্যে কবিতা গুঁজে দেবার ইচ্ছে ছিলো, লুকিয়ে লুকিয়ে দেখা করার সাহস ছিলো, দু টাকার ফুচকা খাওয়ার বিলাসিতা ছিলো।

এপ্রিল মাসে জটায়ুকে সঙ্গে নিয়ে চলে গেলেন সত্যজিৎ। আমার শৈশব ও কৈশোর যে মানুষটিকে ঘিরে ছিলো, গরমের ছুটির দুপুরবেলাগুলোতে মা ঘুমিয়ে পড়ার পরে যেই চরিত্র রা চুপি চুপি আমার সাথে গল্প করতে আসতো, যাদেরকে সাথে নিয়ে আমি ধীরে সুস্থে বড় হচ্ছিলাম, তাদের স্রষ্টা ঐ দীর্ঘদেহী মানুষটি, যিনি প্রায় প্রতিদিন আমার সাথে বিজনে কথা বলতেন, তিনি আমাকে কিচ্ছুটি প্রায় না জানিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। আপনজন হারানোর সেই ব্যথা এখনো আমি বয়ে বেড়াচ্ছি, এখনো প্রতিটা দিন এই বিদেশ-বিঁভুয়ে আমি ওনাকে আঁকড়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছি।

সত্যজিৎের শোক কাটতে না কাটতেই ঐ বছরেরই ডিসেম্বর মাসে সারা দেশজুড়ে ঘটে গেলো এক ভয়াবহ দূর্ঘটনা। কিশোর ছেলেটি তখন কিছুতেই বুঝতে পারে নি যে ‘জয় শ্রীরাম’ বলে চিৎকার করা কিছু গেরুয়াধারী মানুষ কেন ওরকম উন্মত্তভাবে একটা মসজিদ ভাঙতে শুরু করলো। টিভির পর্দায় দেখা সেই দৃশ্য ছেলেটির সরল মনের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছিলো। আর তারপরে সারাদেশ জুড়ে যা যা ঘটেছিলো সেইসব কিছু ছেলেটিকে ভাবিয়ে তুলেছিলো আর সেই ভাবনা ছেলেটি এখনো চালিয়ে যাচ্ছে। সত্যজিৎের মৃত্যু আর বাবরি মসজিদ ধ্বংস সেই কিশোরকে শিখিয়ে দিয়েছিলো যে জীবন সবসময় ফুরফুরে কাটবে না, আস্তে আস্তে যত সে বড় হবে, যত বুঝতে শিখবে, যত এই পৃথিবীটাকে জানতে থাকবে, নতুন নতুন ঘটনা ঘটতে দেখবে ততই এই চিন্তা-ভাবনার সময়টা আর মনে আঘাত লাগার পরিমানটা চক্রবৃদ্ধিসুদের হাড়ে বাড়তে থাকবে। তাই কৈশোর শেষ হতে থাকার সময়কালে অবধারিতভাবে প্রথম প্রেমে ব্যর্থ হবার আকস্মিকতাটা সে খুব তাড়াতাড়ি সামলে নিতে পেরেছিলো।

নব্বইয়ের দশক আমাকে যেমন অনেক কিছু দিয়েছিলো, শিখিয়েছিলো, ঠিক তেমনই আমার থেকে আস্তে আস্তে অনেক কিছু ছিনিয়ে নিয়েছিলো। আমার কৈশোর হারিয়ে গিয়েছে এই দশকে, আমার সরলতা আটকা পড়েছে এই দশকে, আমার বিস্ময়বোধ লুকিয়ে আছে এই দশকে। এখন এই ২০১৫ সালে, আমার নিজের বাড়ি, নিজের পাড়া, নিজের শহর, নিজের রাজ্য, নিজের দেশের থেকে অনেক অনেক দূরে বসে আমি স্বপ্ন দেখি যে একদিন আমি সেই টাইম মেশিনটা ঠিক খুঁজে পাবো আর তাতে করে পাড়ি জমাব সেই দিনগুলিতে। না, তখন যা যা ভুল করেছিলাম, এবার সেগুলো আর কিচ্ছু শুধরোবো না, সেগুলো ঠিক যেমন যেমনটি ছিলো সব তেমন তেমনটিই থাকবে, শুধু আমি আর সেই সময় থেকে ফিরে আসবো না। আগের মতই, প্রতিদিন বিকেলবেলা পাড়ার মাঠে ক্রিকেট খেলে, নর্দমা থেকে বলতোলা হাতে, এবারেও বাড়ি ফিরে চিৎকার করে বলবো, “মা, খুব খিদে পেয়েছে, তাড়াতাড়ি কিছু খেতে দাও না….।
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
পৃথিবীর কোথাও দুঃখরা থাকে, তা অস্বীকার করার দীপ্ত সাহস, অথচ তুমি আমি ভালো করেই জানি, শহরের দুঃখভার অধিক হলে বৃষ্টিরা নামে, মেঘেরা ধারণ করে গভীর যত কালো।   কাপাস থেকে কিভাবে সুতো হয় জেনেছিলাম সেই ভোরবেলায়, তখন হাতের নীলগোলাপ ভালোবেসে অনায়াসে মূর্খের মত দিয়েছি প্রেয়সীকে। খেলাচ্ছলে সে একটা একটা পাঁপড়ি ছিঁড়েছে, গোলাপের রক্তে হাত ভরে গেছে তার অলীক গোপনে। সহজেই ছোট্ট রুমালে হাত মুছে সে চলে গেছে ড্রয়িং ক্লাসে, বিমুর্ত শিল্পের মত সে কারনেই শিখতে পারিনি সুতো থেকে আস্ত কাপড় তৈরীর কুট কৌশল। স্টিল শট জুড়ে জুড়ে সে বুঝি কোলাজ করবে সময়ের।
অতঃপর ভোরবেলা উঠোন জুড়ে এলো গাছের নীচে দাঁড়িয়ে থাকার নিঃস্বতা। কিছু কান্না আমি রেখে যাবো হৃদয়ের অলিন্দে, হয়তো সুর বলে ভুল করবে, সে এমন এক সুর যা কেউ স্পর্শ করেনি কখনও। যে মোচড়ে ব্রম্ভান্ড থেকে তারিফ ঝরে পড়ে, তাকিয়ে দেখো...রূপালি আলো, আমার চূর্নবিচূর্ন স্বপ্নপাত। গভীর ধ্যানের শেষে বড় বাস্তব হয়ে থাকে যেসব প্রশ্নের উত্তর কেউ কখনও পায়নি।

আমাকে ইচ্ছে দাও, তোমার হাতের নরম স্পর্শ, এক অনাবিল সুখ, যত গান পড়ে রয়েছে অবহেলায়, এক সুদীর্ঘ্য রাত আমাকে ইচ্ছে দাও, এই নির্মল বাতাসের কিছু ছোঁয়া, রাত থেমে যাবে তোমার শাড়ীর আঁচলে। কথাগুলি ফুরিয়ে যাবে এক বিস্তৃত আকাশে, জোনাকীর আলোয় দেখা যাবে তোমার মৃত্যুমুখ চেহারা। আমি আবার ফিরে পাবো আমাকে, এক নতুন ছায়ায়। আমাকে ইচ্ছে দাও, যা দেবার ছিল আমাকে, তুমি দিয়ে দাও জলফড়িঙের কন্ঠে।

 এখানে নিখোঁজ হতে হবে এটাই কথা, এখানে নিখোঁজ হয়ে যায় একদিন জীবনের সবকিছু। বাতাসের আস্তিনে আগুনের ফুলকিরা যেমন নিখোঁজ একদিন নিজে, দেখোনা, আকাশের অবতলে আলোর রেখা বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে হেরে যাচ্ছে নিয়নের কাছে। এখানে নিখোঁজ হয়ে যায় জীবনের সবকিছু একদিন সব। তবুও কখনো হারানো বিজ্ঞপ্তির মলিন ফলক দেখি পৃথিবীর কোনায় কোনায় সার বেঁধে অনায়াসে নিয়তি যুঝে। এখানে কেউ কেউ ভালোবাসে নিখোঁজ হতে, এখানে কেউ কেউ ভালোবাসে জীবনের ভ্রম, অথবা ভুলগুলো ধরে রাখে সুখের মতো, তারপর টের পায় আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে কখন হারিয়ে গেছে সবকিছুই।
এখানে নিখোঁজ হতেই হবে এটাই প্রথা। এখানে নিখোঁজ হয়ে যায় জীবনের সবকিছু সব, না রাখা কথারা। 
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
র‍্যান্ডি পশের কথা আমি আগে কোথাও পড়িইনি।
পরে জেনেছি তাঁকে নিয়ে কেবল আমেরিকা নয়, দুনিয়া জুড়ে বিস্তর হইচই হয়েছে,কিন্তু সেসব তখন জানতাম না।
ছুটির দিনে উদ্দেশ্যহীন ভাবে এ-বই সে-বই উল্টাতে উল্টাতে ছোট্ট বইটা চোখে পড়েছিলো।
গত কয়েক বছরে কলকাতার আর কিছু না হোক, একটা উন্নতি হয়েছে।
দু'চারটে বইয়ের দোকান হয়েছে।
যেখানে নিজের ইচ্ছে মত ঘুরে ঘুরে দেখা যায়, যতক্ষন খুশি পড়ে নেওয়া যায়। কলেজস্ট্রিটে এই সুবিধে নেই, ওপাড়ায় বইয়ের দোকানে গিয়ে দাঁড়ালেই সটান প্রশ্ন ছুটে আসে "কি বই চাই?

আরে, কি বই চাই্‌ সে কথা আগে থেকে জানলে আর বই খোঁজার সুখ কোথায়?

তো, বছরখানেক আগে, হঠাৎই চোখে পড়েছিল বইটা, 'লাস্ট লেকচার', লেখক র‍্যান্ডি পশ, কার্ণেগি মেলান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।
অভ্যাসবশত পাতা উলটে ভূমিকায় এলাম, এবং মনে হল, পা দুটো মাটিতে আটকে গেছে।

ভূমিকার প্রথম কয়েকটা লাইনঃ
"I have an engineering problem.
While for the most part I'm in terrific physical shape, I have ten tumors in my liver and
I have only few months left to live.
I am a father of three young children, and married to the women of my dreams."

এই পর্যন্ত পড়ে কিছুক্ষন আর এগোতেই পারলাম না, মাথার মধ্যে কে যেন খুব জোরে জোরে বলছিল, I am a father of three young children, I am a father of three young children

র‍্যান্ডি নিশ্চয়ই জানতেন, তাঁর কথাগুলো পড়ে পাঠকের ওইরকম একটা ধাক্কা লাগবে, তাই এরপরেই তিনি লিখলেন;
"While I could easily feel sorry for myself, that wouldn't do them, or me any good."

   কথাটা বলা সহজ, কিন্তু র‍্যযান্ডি পশ জীবনের শেষ কয়েক মাস এই কথাটাকে যাপন করে দেখিয়েছেন।
খুব বেশিদিন সময় পাননি তিনি, ২০০৬ গ্রীষ্মে পেটে ব্যাথা, প্রথমে জন্ডিস ধরা পড়ল। তারপর আরও কিছু পরীক্ষা, জানা গেল ক্যান্সার।
র‍্যান্ডি জেনে গেলেন প্যাংক্রিয়াটিক ক্যান্সারে অর্ধেক রোগী অসুখ ধরা পড়ার ছ'মাসের মধ্যে মারা যান।

১৫অগাস্ট, ২০০৭, ডাক্তারের কাছে গেছেন রিপোর্ট নিতে, সাথে জে-তাঁর স্ত্রী এবং স্বপ্নের নারী। ডাক্তারের সহকারি কম্পিউটার টার্মিনালে টেস্ট রিপোর্ট দেখে তার সঙ্গে কথা বলে উঠে গেলেন, র‍্যান্ডি উঠে গিয়ে টার্মিনালে বসলেন এবং চটপট পরীক্ষার রেজাল্ট পড়ে ফেললেন।
পড়ে জে'কে বললেন, "Its over. My goose is cooked."
ডাক্তার এলেন , রিপোর্ট দেখলেন। র‍্যান্ডি তাকে প্রশ্ন করলেন,'আমার মৃত্যুর কতদিন বাকি আছে?'
ডাক্তার বললেন, 'সম্ভবত, তিন থেকে ছয় মাস, আপনি ভালো থাকবেন।"

' দ্য লাস্ট লেকচার' যখন হাতে পেয়েছিলাম, ততদিনে ছ'মাস পেরিয়ে গেছে।

মৃত্যু নিশ্চিত এবং আসন্ন জানার পর বেশিরভাগ মানুষই ভেঙ্গে পড়ে, আবার কেউ কেউ হয়তো স্বরচিত বিভ্রমের মধ্যে বাস করে নিয়তিকে ভুলে থাকতে চায়, নিজেকে বোঝায়।
র‍্যান্ডি পশ এক মুহুর্তের জন্যও এমন কোনো আত্মপ্রবঞ্চনা করেননি, অসুখের খবর জানার পর ওসুখ স্বম্বন্ধে, তার পরিনতি সম্বন্ধে তন্ন তন্ন করে জেনেছেন। মৃত্যু যে কতটা আসন্ন, সে বিষয়ে তার কিছুমাত্র সংশয় ছিলনা।এই বোধ নিয়েই বাকি দিনগুলি কী করে জীবনটাকে
যথাসম্ভব ভালোভাবে, অর্থপূর্ন ভাবে বাঁচা যায়, বাড়ির মানুষ গুলোকে নিয়ে কাটানো যায়। তার চেষ্টা করেছেন।
আর তার মাঝেই বিশ্ববিদ্যালয়ে লাস্ট লেকচার দিয়েছেন।

১৮ই সেপ্টেম্বর, ২০০৭।
কার্ণেগি মিলান এর কানায় কানায় ভর্তি হল- লাস্ট লেকচার দিলেন র‍্যান্ডি পশ। শিরোনাম, "Really achieving your childhood dreams"
এই বইটি মুলত সেই বক্তিতারই গ্রন্থরূপ।
নিজের জীবনের কথাই বলেছিলেন র‍্যান্ডি তার বক্তৃতায়, কিন্তু ঠিক জীবন কাহিনি হিসেবে নয়, আবার আমি কি করে আমার ছোটবেলার স্বপ্ন পূরন করলাম টাইপের উপদেশমালাও নয়।

ছোট ছোট ঘটনা, ছোট ছোট কিছু মন্তব্য, ছোট ছোট আঁচড়ে কয়েকজন কাছের মানুষের ছবি, এ সব নিয়েই ' দ্য লাস্ট লেকচার।'

এই লেখার সামারি করতে গেলে বইটাকে নষ্ট করে দেওয়া হবে,দু'একজন মানুষ আর দু'একটা ঘটনার কথা বলি বরং।

শেশ গল্পটা র‍্যান্ডি পশ শুনেছিলেন, তাকে শুনিয়েছিল তারই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকর্মি রোবি কসাক।
র‍্যান্ডির ক্যান্সার ধরা পড়ার খবর ততদিনে সবাই শুনেছে।

রোবি লিখেছেন, তিনি সেদিন সন্ধ্যেবেলায় কাজসেরে বাড়ি ফিরছেন, সন্ধ্যেটা দারুন।
বাতাসে প্রথম বসন্ত, তার গাড়ির সামনে একটি কনভার্টিবল। তার ছাদটি খোলা, সব জানালার কাঁচ নামানো। চালকের একটা হাত দরজার বাইরে অলসভাবে রাখা, আঙ্গুলগুলো আপনমনে গাড়ির টোকা দিয়ে চলেছে, বোঝা যাচ্ছে গাড়িতে গান বাজছে। গানের তালে তালে তার মাথাটাও অল্প অল্প দুলছে, গানের তালে তালে, হাওয়ায় উড়ছে তার চুল।
একটা আশ্চর্য আনন্দ আছে দৃশ্যটায়।
রোবি লেন পালটে একটু কাছে নিয়ে গেলেন তার গাড়িটাকে, এবার পাশ থেকে চালকের মুখ দেখা যাচ্ছে, সেই মুখে একটা হাল্কা হাসি, একটা মানুষ যখন নিজের মনের মধ্যে ডুব দিয়ে খুশি থাকে, তখন তার মুখে এই হাসি ভেসে উঠে। রোবি নিজ মনেই বললেন, ' আজকের দিনটাকে, এই মুহুর্তটাকে মনপ্রান দিয়ে উপভোগ করা বলতে কি বোঝায়, এই মানুষটি তারই প্রতিক'।

একসময় কনভার্টিবলটি মোড় ঘুরল এবং রোবি দেখতে পেলেন, সেটির স্টিয়ারিং এ র‍্যান্ডি পশ। তিনি নিজের মনে বলে উঠলেন : ওহ মাই গড!

গোটা বইটা এবং তার নানা অংশ আলাদা করে পড়লেও ওই একটা কথা বলতে ইচ্ছে করে :ওহ মাই গড।

তার শৈশবের স্বপ্ন কি, সেগুলি সফল করার জন্য তিনি কি করেছিলেন, সে সব কাহিনিও পড়তে বেশ লাগে।
'দ্য লাস্ট লেকচার' আমার কাছে এক অন্য জীবন বোধ, মৃত্যুবোধ থেকে যাকে আলাদা করা যায় না।।
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
তোর শর্করা বেড়ে গেছে শুনেছি সেই কবে… জেনেছি আজ মুঠোফোনে। আমি মুক্ত ডানায় ভর করে পেছনে তাকাই, আমাদের স্বর্নালী দিনগুলি বিমর্ষ মনে হেঁটে হেঁটে আসে।মূল গল্পটা আসলে সাদামাটা ছিল না কখনই। জটিল যতো রহস্য নিয়ে এখনও বয়েই চলছে। ঘনঘন চেক-ইন, সুখী-সুখী স্ট্যাটাসের, আঁকাবাঁকা সেলফিতে কত কিছু লুকিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে,লোক দেখানো হাসি হাসছে। তাই বলে এমন না, তারা সুখে আছে। এখনও রোজ সকালে রাশ রাশ বিষণ্ণতা বুকে নিয়ে ঘুম ভাঙ্গে। তারা দল বেঁধে সব ভালো থাকার নামে, "ভালো থাকার" অভিনয় করে।
এপাশ ওপাশ জুড়ে ভেঙে চুরে ফেলা গল্পের ধ্বংসাবশেষ, নেপথ্যে কবিতার শেষ দুটো লাইন।
জানালা,রাজপথ, চায়ের কাপ ,আর, আকাশ ছাড়া এনগরে সব অসামাজিক। বড্ড অসামাজিক।

যেদিন আর কথা থাকবেনা বলার, সেদিন দেখা হবে পথের মোড়ে। একটা একটা বাতি জ্বলে উঠবে ল্যাম্পপোষ্টে, আর আঁৎকে উঠে হাতড়াবো কথার হাতবাক্স, বড্ড বিব্রত হয়ে হয়তোবা বলেই ফেলবো,
"চিরকুট সব নিজের ডানা এঁকে পালিয়েছে, কিছু বলো," দোহাই সেদিন ও ফের হেসোনা, বড্ড বিব্রত হবো, থমকে চুপ হয়ে যাবো, মুহুর্ত ছুটে পালাতে পালাতে বলে যাবে শেষ সন্ধ্যায়, "কথা হয়ে গেছে।"
কোনো পরিযায়ী পাখি নই আমি বৃহস্পতিতে এলাম শনিতে ফুড়ুৎ । আমি তোমার বারোমাসের আহ্নিকে আছি উড়েউড়ে ঘুরেঘুরে, আদরে, অবহেলায়, তোমার বুকের বাম অলিন্দে।

না, এবার শীতেও তুমি মরবে না। শুধু চোখে এসে ঠাণ্ডা হাওয়া ঝাপ্টে পড়বে,তুমিও শতজন্মের পাপ ধুয়ে নোনাজলে শুদ্ধ হওয়া চেষ্টা করো, করিডরের  মতো রাস্তাটা ধরে হেঁটে হেঁটে যেও, যেখানে
ল্যাম্পপোস্ট আমার আত্মা হয়ে ঝুলে গেছে সরকারি দালানে দালানে। কিছু কিছু অচেনা অভিমান আমাকে মাঝেমাঝে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে যায়। ঘুমের ঠিক মাঝামাঝিতে ভুতের মত এসে হাজির হয় বেওয়ারিশ হয়ে যাওয়া আমার কিশোর দিনের
স্বপ্নরা। আমাকে তাদের পাগলামিতে জাগিয়ে তুলে, আমাকে আষাঢ়ের গল্প শোনায়, শরতের সাদাটে ছন্দ বোঝায়, ম্যাজিকের গোপন রহস্য দেখায়। আমায় ফিরিয়ে নিতে চায় সেইসব দিনরাত্রিতে যেথায় আমার মাঝে ছিল শরতের সাদা আকাশের স্থায়ী ঠিকানা, ছিল কাশফুলের পরিকল্পিত সাজানো সংসার। আমিও তার সাথে আনন্দ চিত্তে চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকি।
কিন্তু খেলাঘর থেকে যখন সুমিষ্ট আহবান এসে আমার ঘরের দরজার কড়া নাড়ে, তখনি বুঝি আমার বুঝি আর যাওয়া হবে না ।

Share
Tweet
Pin
Share
No comments
মেলাতে চাই না আর কিছু ফেলে আসা রাস্তায় যদি পড়ে থাকে ধুলো উড়ে যাবে ধেয়ে আসা ঝড়ের বার্তায় রাত্রি খুঁজবো আজ তোর চোখে জানি আড়িপাতা ঘুমে আবার ভোর হবে। মানুষের অদ্ভুত অদ্ভুত সব ভাল লাগা থাকে। আমারও এমন একটা আছে, বলা ভাল ছিল। আমার অদ্ভুত ভাল লাগা হল কাশির শব্দ শুনে সেটা নকল করা।

ছোটবেলায় ভাঙা দালানের কোণে বসে দাদু যখন কাশতো, আমি সেটা হুবহু নকল করতাম। দাদুর কাশিকে নকলটা এত ভাল হত, সবাই আমাকে বারবার সেটাই করতে বলত। বিয়েবাড়ি, উত্সব যেখানেই যাই সবাই আমায় টেনে এনে বলত, এই বাপ্পা ওই কাশির আওয়াজটা একবার শোনা না। ছোটবেলায় কাশি আমায় একেবারে 'ফেমাস' বানিয়ে দিল।

এরপর যখন ক্লাস ফাইভে নামজাদা এক স্কুলে ভর্তি হওয়ার ইন্টারভিউতে বসি তখন আমায় বাঁচিয়ে দেয় কাশিটাই। স্কুলের অ্যাডিমিশনে টেস্টে ইংরেজি পরীক্ষাটা ভাল দিতে পারিনি। তবু তিন চারদিন পর মৌখিক পরীক্ষায় ডাকা হয়েছিল। পাঁচজন বাঘা বাঘা স্যার-ম্যাডামদের সামনে একেবারে ইঁদুর হয়ে বসলাম মৌখিক পরীক্ষায়। প্রথম প্রশ্ন উড়ে আসার আগেই দিলাম জোরে একটা কাশি, তারপর আবার, তারপর আবার...সেখানেই বাজিমাত। স্যাররা আর প্রশ্ন করার সুযোগ পাননি। শরীর খারাপ বলা ভাল কাশির সৌজন্যে অ্যাডিমিশন টেস্টে উতরে গেলাম। 

ক্লাস এইটে আবার আমার জীবনে কাশি ফিরে এল। বাংলার তাপস স্যার বললেন, আজ একটা খেলা খেলব, যে এই খেলায় জিতবে তাকে অ্যানুয়াল পরীক্ষার আমি বাংলার পুরো প্রশ্নপত্র বলে দেব। ক্ষ্যাপাটে তাপস স্যার দিলেন একটা রচনা লিখতে হবে, বিষয় শীত, যে সবচেয়ে ভাল লিখবে সে পাবে পুরস্কার। আমি লিখলাম শীতের সাইডএফেক্ট নিয়ে... হেডিংয়ে দিলাম 'কাশিতে কাশিও না'। বাকিরা লিখল নিয়মমাফিক সব রচনা। 'কাশিতে কাশিও না' পরে একেবারে গদগদ তাপস স্যার আমায় পুরস্কার দিলেন। জীবনে ওই একবার লেটার মার্কস পেলাম।

কলেজে উঠে কাশির সংজ্ঞা বদলে দিলাম। নিঝুম বলে একটা মেয়ের প্রেমে পড়লাম। কিন্তু নিঝুম এত চুপচাপ থাকত যে ওকে কোনও কথাই বলতে পারতাম না। কলেজ শেষ হব হব করছে সাহস করে মনের কথাটা ওকে বলে বসলাম অনেকটা সিনেমার কায়দায়। ক্লাসে প্রফেসার ঢুকব ঢুকব করছে সেই সময় ওকে বললাম, জানি তুমি কথা খুব কম বল, তাই সঙ্কেতে তোমার জবাব চাই। যদি তুমি আমায় ভালবাসো, তাহলে ক্লাসের মাঝে তুমি একটু জোরে কাশবে, তাহলেই বুঝে যাব তুমি আমায় ভালবাসো, আর না কাশলে আমি আর তোমায় কোনওদিন মুখ দেখাবো না।

রাশভারী চেহারার অর্থনীতির অধ্যাপক ক্লাসে ঢুকলেন। ইউনিয়ন করা ছেলেগুলো পর্যন্ত রাগী অধ্যাপকের ক্লাসে একেবারে চুপচাপ হয়ে গেছে। আমি বসে নিঝুমের কাশির অপেক্ষায়। স্যার তখন পড়াচ্ছেন চাহিদার সঙ্গে জোগানের সম্পর্কের কথা। আর আমি ভাবছি প্রেমের সঙ্গে কাশির সম্পর্কের কথা। একটু বেঞ্চ সরানোর আওয়াজ হলেই আমার বুকটা ধক করে উঠছে। এই বোধহয় কাশির আওয়াজ হল বলে। ক্লাস চলছে, মাঝে মাঝে দু একটা আওয়াজও হচ্ছে। চক পড়ে যাওয়ার শব্দটাও একেবারে বুকে এসে গাঁথছে।  ক্লাস শেষ হতে চলল, কাশির আওয়াজ আসছে না, আমার বুকটা এবার কাঁপতে শুরু করল। বুঝতে পারলাম মেয়েটাকে বড্ড ভালবেসে ফেলেছি। এই ক মিনিটের মধ্যে কাশির আওয়াজ কানে না এলে আমি ভেঙে পড়ব। ক্লাস শেষের  ঘণ্টা বেজে গেল, আমার শরীরটা কেমন করতে লাগল, জ্বর এলো বোধহয়। সেই জ্বরের জন্য আর কলেজে যাওয়া হয়নি। শরীর খারাপ নিয়েই কোনও মতে ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষাটা দিলাম। রেজাল্টের দিনে কলেজে গিয়ে নিঝুমকে খুঁজলাম পেলাম না।

তা হোক, ততদিনে আমার বিশ্বাস এসে গেছে কাশিটা আমার কাছে খুব 'লাকি সাইন'। প্রতি শীতেই একবার না একবার কাশি হয় আমার। তখন বেশ লাগে। কফ সিরাপগুলো খেতেও বেশ ভাল। মিথ্যা বলব না কাশি আমার কাছে পয়া বলে মাঝে মাঝে জোর করে ওকে ডেকেও আনি। বিশ্বাসটা আরও দৃঢ় হল গত বছর শীতে। বলা নেই কওয়া নেই একটা পত্রিকায় গল্প লেখার জন্য বেশ ভাল টাকার অফার পেলাম, গলায় তখন আমার কফ, মাঝে মাঝেই তখন আমি খকখক শব্দে কাশি।

ও ঘর থেকে কাশির শব্দটা শুনে এখন কানে হাত দিই। অসহ্য লাগে শব্দটা। যেখানেই যাই যেন ওটা তাড়া করে বেরোয়। সেদিনে এক বন্ধুর বাড়ি পার্টিতে রাতে খুব জোরে গান বাজাচ্ছে, আমি তখন ঘোর মাতাল, হঠাত্‍ কোত্থ থেকে এসে পড়ল আওয়াজটা। গানের সুর ছাপিয়ে ধুকো কাশির আওয়াজ..আমি দুটো হাত দিয়ে ভাল করে কান দুটো বন্ধ করে দিলাম। ঠিক ফাঁক খুঁজে ঢুকে পড়ল বেয়ারা কাশির শব্দটা। আমি ছুটে বাইকে উঠে পড়ে পালালাম..আওয়াজটাও আমায় তাড়া করে ধরে ফেলল। বাইকের ঘঁ ঘঁ আওয়াজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাজছে কাশির শব্দটা।

অনেক টাকা দরকার এখন...বাবার কাশির সঙ্গে রক্ত বেরোচ্ছে। জানি না কী হবে...কাশির শব্দটা এখন আমায় ভেঙচি কাটে। দিনরাতে রাতবেরোতে উদয় হয়...কানে চাপা দিয়ে দিই তখন। এখন আবার ওই শব্দের সঙ্গে নতুন একটা যোগ হয়েছে। দাদুর শ্রাদ্ধের দিন মজা করে দাদুর কাশির ডাকটা অন্য ভঙ্গিমায় নকল করেছিলাম, সেই ডাকটা এখন শুনতে পাই। কাশি জিনিসটা ভয়ঙ্কর আমি আর ওকে ভালবাসি না, একদম না....
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
সে যাওয়ার চলে গেছে।  কিন্তু কোথায় এই মেঘলা আকাশে দাগ রেখে গেছে।  তোকে বলেছে কেউ তোর চোখটা বড় গভীর, ওখানে একটা চাহিদা রাখা আছে।চিরকাল সরস্বতীই প্রিয় আমার, পছন্দ তনুজা, পছন্দ সুচিত্রা মিত্র। তবু কোজাগরী চাঁদ যখন সুখে ভেসে থাকে আমাদের পুরনো দীঘিটার বুকের উপর তখন তাকে হারিয়ে যাওয়া মেয়েটির মতো লাগে, সেও তো এমনই করে বুকের সিঁড়ি দিয়ে উঠে আসতো ছাদে। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে প্রতারিত হওয়ার জন্য যখন প্রস্তুত করি সততাকে তখন মাথার মধ্যে কে জানে কেউ বলে- ‘কি দরকার? ঘরে বসে থাকো, কবিতা লেখো। বলে, মানব সভ্যতার ইতিহাস আসলে প্রতারণার ইতিহাস’।

ছোটবেলায় অঙ্কের প্রতি জোর দেওয়া হয় কেন তা ঠিক কখনই বুঝতে পারিনি, বড় হয়ে তো কোনও অঙ্কই মেলে না, মেলে না সম্পর্কের সমীকরণগুলো। প্রতিদিন সকালে উঠে বাড়ির কাজের মেয়েটির চোখের দিকে তাকিয়ে অদ্ভুত কিছু কথোপকথন হয়, নিঃশব্দে। এতদিনে জেনে গিয়েছি, বর তার প্রায় প্রতি রাতেই মদ্যপ হয়ে বাড়ি ফেরে। বিছানায় রাজি না হলে, নরম মুখে অনেক দাগ নিয়ে সকাল সকাল আসে কাজে। রাজি হতে হয়। অভ্যাসে, অনেক অভ্যাসে।
একদিন বলেছিল সে-‘তোমার ছবিগুলো খুব সুন্দর’, আরেকদিন- ‘বিয়ে করবে কবে? ‘মাঝে মাঝে যে আমারও ঘর করতে যে ইচ্ছে করে না এমন নয়। একটি শীতের বিকেলের আলো যখন ক্লান্ত হয়ে শুয়ে পড়ে সোনা-ঝুরি গাছেদের বুকে তখন ঘরে ফিরতে ভাল লাগে।

 ইচ্ছে করে ট্রাফিকের ওই কালো মানুষটির কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করি, সংসারকেও কি আপনি একই দক্ষতায় নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন? পৃথিবী, গ্রহ, নক্ষত্র। আপনি কি যাদু জানেন? আপনি কি ভগবান? তবে সামনের পুরনো বাড়ির যে ষাটোর্ধ মহিলার স্নান আমি হঠাৎ দেখে ফিরিয়ে নিলাম চোখ, তাকে পরজন্মে আমার প্রিয়তমা করে নিয়ে আসুন। বলুন এই স্বল্প খিদের শরীর যেন কেবল একটাই শব্দ পায়-বিশ্বাস। যাকে খুঁজেছি আমি, তার সমান্তরাল চলেছি, ফলে মিলন হয়নি। মিলন আমাদের ক্যানসার পাওয়া আচার-কাকুর বয়ামের আচারের মতোই? যখন একজন মানুষ সম্পূর্ণ উন্মুক্ত করেন নিজেকে অপরের কাছে, তখন তারা কি দুটো শরীর থাকেন, কখনই? তখন তাদের সম্পর্কের নাম কি হয়?

পরশু স্বপ্নে এক সোনালি চুলের অপরিচিতা বালিকা হঠাৎ এসে আমার ভেঙে ফেলা বসতবাড়ির মৃত জানলা দিয়ে ফেলে দিল ধুনুচি। তাতে ধুনো ছিল না, শুধুই কাঠকয়লা। তারপর দুজনেই নিঃশব্দ ছিলাম। একটা চিলেকোঠার ঘরে বসে থাকি, যার কেবল জানলা আছে, কোনও দরজা নেই। একটি জানলা আছে, যেখান থেকে প্রিয় মানুষদের দেখা যায়, শোনা যায় মনের কথা।
পুরনো মলাট-ছেঁড়া বই, ভাঙা ক্যাসেট, রেডিও,ধুলো-ভর্তি তোষক, এলোমেলো বিছানায় কিছু রুগ্ন কোলবালিশ নিয়ে বসে থাকি। স্বপ্ন দেখি শীতকাল এলে ওই মাঠের কোনাটায়, যেখানে খেলা হয় সেখানে আসবে কোন নতুন শিশু, তার গন্ধ পাব, তার নরম পায়ের প্রতিটি চলা লিখে ফেলব খাতায়, লিখে ফেলব, জরায়ু নয়, হৃদয়কে ভালবাসা বলে। লিখে ফেলব আমার লেপের পোশাকের ভেতর এমন এক আলতামিরা আছে, কেউ খুঁজতে আসেনি, কেউ আসেনি, প্রাচীন।

কবিদের সাথে ঘর করা যায়না কক্ষনো। শিল্পীদের সঙ্গে আরও নয়। তবু কোন এক লক্ষ্মীপুজোর দুপুরে যখন আদিম শেয়ালেরা খুঁজে ফেরে বিপন্নতার সুখ, মৃত্যু-বোধ মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় আমার আমি সেই বাদামি চামড়ার মেয়েটির দেখা পেতে চাই যে চার পাঁচটা স্টেশন ট্রেনের জানলার কাছে বসে হঠাৎ নেমে পড়ে এক নীরব স্টেশনে।যার ঝোলায় থাকে কোন অচেনা কবির দু-ফর্মার একটা কাঁচা কবিতার বই।আমি তার প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম।
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
ছায়াপথ পেরিয়ে গ্রহ নক্ষত্র পেরিয়ে পৃথিবীতে এসে থমকে দাঁড়ালো আলো— একটি সবুজ পাতা ফ্রক বদলাচ্ছে।বিচ্ছিন্নতা কখনই দ্বীপের মত হতে পারে না। দ্বীপের চারপাশে জল থাকে...সেখানে নৌকো ভাসানোর স্বপ্ন থাকে। হারিয়ে যাওয়ার ভয় থাকে, পেরিয়ে যাওয়ার বিশ্বাস থাকে...
জানিস প্রিয়তি, ধীরে ধীরে আমার নদীটার জল কালো হয়ে যাচ্ছে। তবুও তুই যখন নদীটার পাশে এসে দাঁড়াস, তোর চোখটা আগের থেকেও বেশি নীল লাগে।

জানিস প্রিয়তি, সবুজ পাতারা কাঁদলে বোঝা যায়না, বোঝা যায় যখন ঝরাপাতারা ভিজে থাকে। আমার পাতাগুলো ধীরে ধীরে ঝরে গেছে। প্রিয়তি, তুই কল্পতরু নোস, তবুও সবাই তোর কাছে চায়, সে রুটি হোক বা শরীর। তোকে আমি একটা উদ্ভিদ বলেই ভাবি। তোরও আলো চাই, জল চাই, দাঁড়িয়ে থাকার জন্য একটু মাটি চাই...
ঠিকানার সাথে আড়ি করে মেঠো পথে আমাদের হাতে ধরা দেয়নি চাঁদ। প্রিয়তি, আমাদের আজও পথভোলা পথিক হওয়া হলোনা।
মাঠের ধারে মেহগিনি গাছটা অনেকটা বড় হয়ে গেছে। চোখেই পড়েনি, ওর মাথাটা আজ আর হাত দিয়ে ছোঁয়া যায়না। গোলপোস্ট গুলো আজও একই জায়গায় রয়েছে, শুধু পোস্টের জালগুলো আজ ছেঁড়া।



আমার মনে পড়ে – আমি যখন বিশের কোঠায়,তখন গ্রীষ্মের শেষের পুরনো চাঁদ, কানের দুলে
পাথরের রূপ নিয়েছে , বাতাস এল চাঁদের থেকেআর সহসা আক্রান্ত হল বৃক্ষরাজি,এবং একটি পাতা ঘুরতে ঘুরতে ঝরার সময়ে পথ খুঁজলো। লণ্ঠনের মৃদু আলোর মধ্য দিয়ে বহুদূরের গাঢ় কৃষ্ণ নিসর্গ-জোর করে প্রবেশ করলো সিদ্ধান্তহীন শহরের ভিতর।
নিরুদ্দেশ হয়ো না… মুহূর্তেই নিরুদ্দেশ হতে পারো তাহলে শতক শতক পেরিয়ে আমাদের দেখা হবে কেমন করে? তোমার দ্বৈত কারো কি পৃথিবীতে থাকা সম্ভব কিংবা আমার সত্তার? আমি বৈকাল হ্রদের গভীরে ডুবে গিয়ে অন্য কোথাও ফোঁস করে ভেসে উঠতে চাই, মিসিসিপিতে নয় কেন,আমার দারুণ ভালোবাসার এই মহাবিশ্বে আমি নিঃসঙ্গ আগাছা হয়ে থাকতে চাই।




দুই তিন অথবা আরও বেশি দিন ধরে যারা বসে আছে পৃথিবীর তাপে তাপে,
ট্রেনে ঝাকুনির গতিময় দূরে - শেষরাতে বৃষ্টির অপেক্ষায় ; যারা জেনেছে ,
ঝড়-বৃষ্টি কিম্বা সে সব প্লাবনের গল্প -- নূহের নৌকা -- জোড়ায় জোড়ায় প্রাণীসকল -- প্লাবন প্লাবন ;
প্লাবনের শেষে ছড়িয়ে ছিটিয়ে জগতময় সিঁড়িপথে মাকড়সার জালে পতঙ্গের আজন্ম আতঙ্কে...

এমন এক মাকড়সার জালের ছবি আঁকতে আঁকতে আমার সমস্ত আষাঢ়ের দুপুর।

জানিস, এখন আমার একমাত্র সঙ্গী নৈ:শব্দ, আমার সাথে কথা বলে, কষ্ট পেলে আমাকে ভোলায়, বলে এবার তাহলে "একলা একলা পথ চলা"। আমি তো কোনদিন বন্ধুত্বের দাবী রাখিনি,
শুধু রাত্রির কাছে চেয়েছিলাম - একটা সুন্দর ঘুম আর পরিযায়ী পাখিদের কাছে একটা রঙীন স্বপ্ন; তবু কেন উচ্ছাসের নদী শুধু একটানা বয়ে যায় দু-পাড়ের ছায়াছবি স্থির-নির্বাক হয়ে যায় ?
 আর আমি, এখনও ঘড়ির কাঁটার লেজ ধরে প্রাণহীন চর হয়ে পড়ে আছি তার অপেক্ষায়। বুঝলাম হারিয়ে যাওয়া কোন কিছুই ফিরে আসে না, শরীরের নিঃশ্বাসের মতো হারিয়ে যায় চিরতরে। আজ আমার কোন কিছুর জন্য অপেক্ষা নেই, সবই সয়, উচ্ছাসে ভরা প্রানোজ্জল তোমার লেখাগুলোর জন্যেও নয় । কে জানে বিকেলের কাছে ঝলসে যাওয়া দুপুরের কান্না তোমার ছোঁয়ায় কাগুজে নৌকায় ভেসে আসবে কিনা আমার কাছে ...




শুয়ে শুয়ে তাই ভাবি - সময় মানেই এগিয়ে চলা, পাহাড় যেমন মিশে যায় নীলে দুই বাহু প্রসারিত করে,
দুর্গম খাদ বেয়ে যেমন গড়িয়ে নামে উন্মত্ত ঝর্না রূপের অঝোর ধারায় আমার সবকিছু তছনচ করে;
জানিস পাগলী, সেই ঝর্ণার বুকের মাঝে আছে একটা কষ্ট জমা পাথর, সময়ের সাথে একদিন রাশি রাশি বালিকণা হয়ে ভেঙে পড়বে তোর চোখের কোনে, তখন নাহয় ফেলে দিস ঠিকানা না রেখে ।
আজ শহরের নির্জন রাস্তায় হাঁটছে আমার সব ভুল মনের অন্তর্বাস ছুঁয়ে আছে জমে থাকা যত জল,
প্রতিটি অঙ্গে আজ শুধু অপেক্ষা -- দূরের বিলাসী, হে মহিয়সী, আমি যে তার সুদুরের পিয়াসী।
জানি সব শেষ হয়ে গেছে অথবা হয়নি শুরু কিছু, জীবনের নিরর্থকতা প্রেমহীন থেকে অর্থবহ হয় শুধু; তবু তহবিলে গচ্ছিত রাখি সব স্মৃতি, বিদগ্ধ জোনাক --কালো রাত শেষ, আবার শুরু হবে নতুন প্রেমের সকাল ।




Share
Tweet
Pin
Share
No comments
কোলাহলে কিংবা নির্জনে, নৈঃশব্দে কিংবা গর্জনে, স্বপ্নে কিংবা জাগরণে, প্রলয়ে কিংবা সৃজনে, খুঁজি ফিরি নিজেকে একান্ত আমার আমি-কে। নীল জলের টানে দিগন্তের দিকে ঝুঁকে পড়েছিস তুই। জীবন ধেয়ে বেড়ায় তোমাকে আর আমায়। অতঃপর কিছু রঙ নিয়ন্ত্রনে রাখা হয়নি গাছেদের নিজস্ব ক্যানভাসে। নরম আলোর বৃত্তে আমরা পরস্পর ছায়া এবং দৃশ্যাবলি... বৃত্তের বাইরে আছি আমরা, চালাঘর আর রংচটা চায়ের কাপ, চুমুর জায়গায় চুমুক রেখে পোড়ামাটির জীবনশৈলী লিখে রাখি সেরামিক্সের কথকথায়।
ট্রেন চলে গেছে ছেড়ে। ফিরে আসবেনা আর বৃষ্টির মরসুমে। কেউ ফিরে যায় বাস্তবে আর কেউ ওয়েটিংরুমে। চশমার ফাঁকে কবেকার জল, আজও থেকে গেছে একা। নদীতে গাছের ছায়া,
শেওলা পড়া পাঁচিল… সব ছিল একা, তোর মত একা।

ঢের ভাল ছিল আমার বিষণ্ণতা… বিষ বুকে এখন আমি স্বপ্নের মত বোকা… নীলের আভায় রক্ত মাখিয়ে রোজ ছবি আঁকি মানুষের ভীড়ে। ভাঙ্গা পাঁচিল,শকুন,অন্ধকার আর তার মাঝখানে আমি রঙহীন-একা। এর চেয়ে ঢের ভাল ছিল তোর মত বিষণ্ণতা।
আসবে যত পাতার কথাও - কে কখন চেয়েছিলো শীতের কবিতা - বলেছিলো - কথা দাও-
আজও সে কথামালা আছে তোলা অবাক খাতার 'পরে - আজ আবার হয়তো হবে খোলা।
হয়তো হবেনা - আহা - না ঝর্ণা - না বর্ষাবেলা - পদচিহ্নময় বাংলার রূপোলি খেলা - খেলা ফেলে চলে যাওয়ার নৌকো জীবনে ফেরেনা। নোঙরের দাগ পড়ে রয় ঘাটে - তবু সে অচেনা।



দেখি - ঝকঝকে সব মুখ - চকচকে স্নানঘর - অর্ধচেনা - অর্ধজানা - আশপাশের নতুন কলস্বর।
ওই মুখ, ওই ঘরদোর আমাদেরই পাড়ায় ছিলো -
আগে তা তেমন করে নজর পড়েনি - আজ হঠাত পড়লো। এইমাত্র রাস্তায় দেখা নতুন মুখকে মনে করে - হয়তো কবিতা হবে - কিংবা গল্প। পাতারা রাখবে ধরে।

রাতের অন্ধকারেও নাকি লুকিয়ে থাকে কিছু গল্প। আমি তাই চোখ মেলে অন্ধকারের উপস্থিতি মেপে অপেক্ষায় আছি। দাও, তোমার গল্পের কিছু প্রান, তা দিয়েই আমি রচনা করবো অসহায় আত্নসমপর্ণে হারিয়ে যাওয়া কোন গানের শেষ দু'লাইন।
একঝাঁক মানুষের মধ্যে খুব একা হয়েছিলাম আজ বিকেলেই। শেষ বিকালের সূর্যটা কারন। এই রকম সূর্যাস্তের কাছে গেলে মন যে কেমন করে।
একটা ছোট্ট মেয়ে বালিতে গড়াগড়ি দিচ্ছিল। আমি প্রজাপতির মত সেই মেয়েটার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। জীবনের সুখগুলো ওর ফ্রকের ভাজে ভাজে দোল খাচ্ছিল। অস্ত যাওয়া সুর্যের আলোতে
ওকে কি দারুণ যে দেখাচ্ছিল। ডিজিটাল ক্যামেরার ক্লিক এ সেই বিকেলের সূর্যটা আমার
কাছে বন্দী হলো।
এক রাশ কলকাকলির মধ্যে দাঁড়িয়ে আমার নিজস্বতায় সূর্যকে আমার মায়ের কাছে পাঠিয়ে দিলাম।
কি আশ্চর্য এক অনুভব, এখানের অস্ত যাওয়াটা সূর্যটা ওখানে মায়ের চোখে আলো দিচ্ছে।

কেউ চলে যাবে,হয়তো কেউ- অনেক কাছে থেকেই ভুলে যাবে। তবু ধরে রাখতে ইচ্ছে করে,
তবু পাশে থাকতে ইচ্ছে করে… রাশি, রাশি গল্প বলা রাত- হয়তো একদিন ভোর হবে,
জানি আর কখনোই ফিরবে না সেই রাতের-ই টানে।
আমার এই ছোট শহরে যারা ছিল-সবাই আছে, এখনো পদ্যে খুঁজি,গদ্যে আঁকি, ভুল করে হলেও তোমাতে হারাই। একলা ঘর,কিছু পুরনো স্মৃতি এলোমেলো তোমার প্রিয় বই- একলা জ্বলা মোমবাতি,



ধুলো জমা সেই গিটারে- বিষাদী সূর বাজে।
এখনো আকাশে মেঘ জমে বৃষ্টি পড়ে, এখনো আমি ভিজি…

বৃষ্টির শহরে বিষন্ন বিকেলের রঙ পালটে দিয়েছিল সে চায়ের টেবিল। লুচি-ডালের অদ্ভূতুরে সময়ের আড্ডাবাজি আর গতিপথে উড়ে আসা সহস্র বৃষ্টিকণার 
ভেতর পূণর্বার জেগে উঠা অতীত দিনের বিচ্ছিন্ন সব সুরের আকস্মিক খোঁজ। 
আমাদের বেঁচে থাকা জলমগ্ন দুঃস্বপ্নের মত অথচ বৃষ্টি জল ফেরায় নিখোজ হয়ে যাওয়া মগ্নতার দিন। মায়ের আচলের সেই সে ওম। মাকড়শার জালের ভেতর থেকে কবিতা বুনার আশ্চর্য সব সূত্র আর 




পৃথিবীর কোথাও দুঃখরা থাকে, তা অস্বীকার করার দীপ্ত সাহস। 
অথচ তুমি আমি ভালো করেই জানি, শহরের দুঃখভার অধিক হলে বৃষ্টিরা নামে, মেঘেরা ধারণ করে গভীর যত কালো। 
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

We all know that statistics can lie. And these days what with fake news and all, checking your stats can be a full time job. But, just because something sounds crazy, doesn’t mean it’s not true. Today we’re going to go through some data points that might make your head spin. Here are 25 curious statistics that will mess with your view of the world.





1.80% of Soviet males born in 1923 didn’t live to see 1946

world war 2
Note: the common “Buzzfeed” statistic is 80% but this is incorrect. See the source for more information.

2.There are more people in Greater Tokyo (38 million) than in all of Canada (35 million)Tokyo





3.There are more trees on Earth than there are stars in the Milky Way. In fact, there are 30 times more! (There are 3 trillion trees and 100 billion stars)stars

4.You are more likely to be killed by a toddler with a gun than by a terroristchild




5.Although some people brag about how environmentally conscious they are because they don’t travel or fly planes, agriculture contributes significantly more to greenhouse gases than transportation.cows

6.For the past 15 years, nearly 20% of the daily searches conducted on google have been novel. In other words, every single day 20% of the search phrases people type have never been typed before (that’s about 500 million searches per day)
Google

7.The US has 3.5 million homeless people and 18.5 million empty homes.foreclosure


8.In the last 40 years, Earth has lost 50% of its wildlife
elephants

9. 2 out of every 3 Australians will get skin cancer
beach




10.If the Sun all of a sudden exploded into a supernova, it would be a billion times brighter than a hydrogen bomb exploding right in front of your face
nuclear
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
যদি কোন দিন তোমার সময় হয় তবে ঘুরে যেও আমার পৃথিবীটা , দেখে যেও এখনও সাজিয়ে রেখেছি আমার পৃথিবী তোমার স্মৃতি গুলো দিয়েই । যেখানে এখনও কোন স্পর্শ লাগে নি । বদলে দেয় নি আমার পৃথিবী কেউ ।

আবার জীবন পেলে দেখাতাম কাশ ভাঙা ঢেউ।
বেরঙ দেওয়ালে চাপা পড়ে গেছে জীবনের সোঁত...
আবার কখনও যদি হয়ে আসি আমি আরও কেউ,
তোমায় দেখাবো ফের পরিশেষে বড় হয়ে ওঠা!




শুকনো শিরায় জল কেঁদে যায় সারারাত ভর
টুপটাপ করে আয়ু খসে গেছে সন্ধ্যার মত,
মরে যাওয়া খোয়াইটা আজও কি রেখেছে বালুচর
জলের স্মৃতিরা আজও ঘুরে মরে বুকে অবিরত?




যদিও দেওয়ালে চাপা পড়ে গেছে জীবনের সোঁতা...
আমায় বরং কালো বেদনার মত মনে রেখো,
তোমায় দেখাবো ফের পরিশেষে বড় হয়ে ওঠা!
আমিই নাহয় যাই...
প্রিয়তমা, তবু তুমি থেকো......!



Share
Tweet
Pin
Share
No comments
কৈশোর কখনওই অপাপবিদ্ধ ছিল না। যে দিন দশম শ্রেণিতে ছেলেটি চটি বই নিয়ে গেল, ক্লাস শুরু হওয়ার আগে ভিড় উপচে পড়েছে সেই ধেবড়ে যাওয়া কালো ছবির উপর। গোকুলের দোকানে কাউকে কাউকে টিফিন পিরিয়ডে বিড়ি কিনতে দেখা যায়নি এমনও নয়। ইতিহাস পিরিয়ডে এক জন খাতায় পাতার পর পাতা ভরে লিখেছিল কোচিং ক্লাসের এক সুন্দরী কিশোরীর নাম। ফার্স্ট বেঞ্চে সে যে যখন তখন মাস্টারমশায়ের হাতে ধরা পড়ে যেতে পারে, সেই খেয়ালটুকুও ছিল না। হয়েছিলও তাই। শুধু মাস্টারমশায়ই বুঝতে পারেননি সেই নামাবলী কীর্তন এবং তার লেখককে নিয়ে করণীয় কী।




অতএব সে দিন অল্পের উপর দিয়েই ফাঁড়া কাটে। যদিও ক্লাস কেটে বন্দনায় অনিল কাপুর-শ্রীদেবী দেখতে গেলে ধরা পড়ে যাওয়ার চান্স ছিল অঢেল। যারা ধরে ফেলতেন, তারা তখনকার মতো মৌনব্রত অবলম্বন করে ঘরে ফিরে “ওদের বাড়ির ছেলেটা গোল্লায় গেল” বলে মুচকি হাসার লোক ছিলেন না। রীতিমতো তিরস্কার বাঁধা ছিল কপালে। এবং সেই শুভানুধ্যায়ী তিরস্কার করেছেন কেন, এই প্রশ্নের জবাব চেয়ে ছেলেটির বাবা-মা-পরিবারবর্গ বাড়িতে হানা দিত না।

 আমরা সকলেই জানতাম, আমাদের কেউ-কেউ হয়তো মেধার দিক থেকে এক্টু বেশি সরেস, কেউ বা মেধাবী হলেও ফাঁকিবাজ, আবার কারও পড়ার বই দেখলেই মনে হয় এভারেস্ট পর্বতের তলে বিনা অক্সিজেনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ফারাকটি মেনে নেওয়াই ছিল দস্তুর। প্রতি পরীক্ষায় একশো শতাংশের কাছে নম্বর না পেলে, তার জীবনযৌবন সব যে হয়ে গেল কালো, এমনটি ভেবে নেওয়ার কোনও কারণই ছিল না। চাকরিবাকরির বাজার তখন বেশ খারাপই, তবুও কোথাও একটা আশ্বাস ছিল, কিছু না কিছু হয়ে যাবে। সবাই মিলেজুলে ঝগড়া-হাসিতে ভালোবাসা-বাসিতে মধ্যবিত্তের দিন গুজরান, যেখানে সুখ হয়তো বিন্দুসম, কিন্তু স্বস্তি অগাধ।




আমরা কিশোর ছিলাম, টিন-এজার হতে পারিনি। কৈশোর যে কোন মুহূর্তে এসে টিন-এজ হয়ে গেল, জানতেও পারিনি। কাগজে যখন দেখি, ক্লাস এইটে উঠলেই বাধ্যতামূলক মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার নিদান দিচ্ছেন জ্ঞানী মানুষজন, তখন নিজেকেই কেমন অসম্পূর্ণ লাগে। মনে হয়, কোথাও হয়তো কোনও ভুল থেকে গেল। কোথাও হয়তো মস্ত কোনও ভুল হয়ে যাচ্ছে। সমস্যা হল, সেই ভুলটা কী, জানি না। রিপ ভ্যান উইঙ্কল-এর মতো কখন যেন ঘুমিয়ে পড়েছি।
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
" "You remain the hero in your own story even when you become the villain in somebody else's.— Anthony Marra, The Tzar of Love and Techno.







Submitted by Melanie Krull, Facebook

     

2. Connor Franta, Work in Progress

Submitted by Shabnam Mirzo, Facebook




3. V.E. Schwab, A Darker Shade of Magic

Submitted by Heather Pate Godwin, Facebook


4. Hanya Yanagihara, A Little Life


Submitted by Ashley.









5. Jennifer Niven, All the Bright Places


Submitted by anniekong.









6. Seanan McGuire, A Red-Rose Chain


Submitted by ashlynm40d2f4f8a









7. Kiera Cass, The Heir


Submitted by tovas3.









8. Sabaa Tahir, An Ember in the Ashes


Submitted by taylormonroe7









9. Anthony Marra, The Tzar of Love and Techno


Submitted by anned471d63c39





10. Naomi Novik, Uprooted


Submitted by r4a44782c9









11. Pierce Brown, Golden Son


Submitted by kellyb4c224b160









12. David Arnold, Mosquitoland


Submitted by michaelak4013a23fa





13. Tyler Oakley, Binge






Submitted by Sydkurty83





14. Samantha Shannon, The Mime Order


Submitted by darkblackforeverness





15. Sarah Dessen, Saint Anything


Submitted by skeenan42





16. Adi Alsaid, Never Always Sometimes


Submitted by OneDirectioner









17. Bill Clegg, Did You Ever have A Family


Submitted by booker16
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
Newer Posts
Older Posts

About me


About Amalie

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Praesent non leo vestibulum, condimentum elit non, venenatis eros.

Follow Us

Labels

Amazing Facts Books Humanity the guardian Travel আমার একলা থাকার সঙ্গী কথাকাব্য কবিতারা নন্দিনীকে বর্ষার কবিতাগুচ্ছ নন্দিনীকে শীতের কবিতাগুচ্ছ নস্টালজিক মন নীলপরীর গল্পেরা প্রিয় মুভি এবং রিভিউ

recent posts

FOLLOW ME @forbestime

Blog Archive

  • ▼  2017 (150)
    • ►  December (35)
    • ▼  November (27)
      • মন খুশির কোলাজ
      • বৃষ্টি তোকে
      • বিকালের রোদে ভোরের গন্ধ
      • হারিয়ে যাওয়া দুপুর
      • মনখারাপের কবিতা
      • সে এক রূপকথার গল্প
      • এখানে নিখোঁজ হয়ে যায় জীবনের না রাখা কথারা
      • এক মরনজয়ী জীবন প্রেমিকের কাহিনী- The Last Lecture
      • ব্যাক্তিগত সব বনভুমি
      • কাশিতে কাশিও না
      • কোজাগরী
      • নির্জনতা থেকে পাঠ
      • টুকরো টুকরো আমি ছড়িয়ে আছি
      • Curious Statistics That Will Mess With Your View O...
      • তবু তুমি থেকো
      • এখন আর কিশোর-কিশোরী নেই, তারা টিন-এজার
      • Beautiful Quotes From Novels That'll Make You Wann...
      • Quotes From Fictional Characters That ate Still Re...
      • আমার একান্ত পলাতক গল্প
      • মৌনতার দস্তাবেজ
      • ছোট ছোট দুঃখ কথা এবং তসলিমা নাসরিন
      • অরণ্যে যারা হেঁটে গেছে
      • অবেলায়
      • ফেরারী গল্পেরা
      • কিশোরী পাখির পালক
      • আকাশের ছাদে বসে থাকা পাখির পালকের নাম কবিতা
      • যে শহরে ভালোবাসা হলুদ গল্প হয়
    • ►  October (19)
    • ►  September (4)
    • ►  August (15)
    • ►  July (11)
    • ►  June (8)
    • ►  May (31)
  • ►  2016 (25)
    • ►  December (2)
    • ►  March (23)

Created with by BeautyTemplates