• Home
  • About
  • Contact
    • Category
    • Category
    • Category
  • Shop
  • Advertise

Banggle.Info

facebook google twitter tumblr instagram linkedin
তোমাকে ছুঁতে গিয়ে যদি<br />আমি এসে যাই মৃত্যুর কাছাকাছি<br />তবে জীবনের নীল খামে<br />আমার সমস্ত ভালোবাসা<br />উইল করে যাবো তোমার নামে।।“দুঃখ তোমার কেড়ে নিতে চায় যত
এমন একটা নাছোড়বান্দা ছেলে
সুখের দিনে নাইবা পেলে পাশে
খবর দিও হঠাৎ কান্না পেলে”
পৌনঃপুনিকতা বড্ড বাজে জিনিস; জীবনে কোনো গল্প নেই, জীবনটাকে একটা সরলরেখা হিসেবে চিন্তা করে সময়নিরপেক্ষ যে কোনো একটা অংশ তুলে নিলেই পুরো জীবনের রেপ্লিকা পাওয়া যাবে। কোনো গল্প নেই, কোনো বিশেষ ঘটনা নেই; বড্ড খারাপ।
শহরের কোনো পুকুরের পাড়ে মাটি নেই। সেই গুড়িগুড়ি বৃষ্টির মাঝে আমি বসে থাকবো; একা এবং একাকী। পুকুরের পাশ দিয়ে চলে গেছে কালো পিচ মোড়ানো একটা পথ, সেই পথটাও ফাঁকা থাকবে। আমি বৃষ্টির মাঝে তাকিয়ে দেখবো নীলছাতা মাথায় দিয়ে গুটিগুটি পায়ে কে যেন এগিয়ে আসছে।
মন, অনেক বড় বড় শহর দেখেছো তুমি; সেই সব শহরের ইট পাথর, কথা কাজ আশা নিরাশার ভয়াবহ হৃত চক্ষু আমার মনের বিঃস্বাদের ভেতর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে; কিন্তু তবুও শহরের বিপুল মেঘের কিনারে সূর্য্য উঠতে দেখেছি, বন্দরের ওপারে সূর্য্যকে দেখেছি মেঘের কমলা রঙের ক্ষেতের ভিতর প্রণয়ী চাষার মত বোঝা রয়েছে তার; শহরের গ্যাসের আলো উঁচু উঁচু মিনারের উপরও দেখেছি, নক্ষত্রেরা অজস্র বুনো হাঁসের মত কোন দক্ষিন সমুদ্রের দিকে উড়ে চলেছে। হায় মেঘ, পর্যটক কুমারী মেঘ, তুমি উড়ে গেলে সবুজ কান্না ঝরবে নীলকন্ঠ পাখির চোখে।
এই শহরের কঠিন আস্তরনের উপর ঋতুচক্র তার কেরামতি দেখাতে পারে না। বুড়ো যাদুকরের মত সে ধুঁকতে ধুঁকতে আসে বটে, কিন্তু পরনের ছেঁড়া পাতলুন নোংরা জামা পথে পথে ঘুরে বেড়িয়ে ফিরে যেতে হয় তাকে। এ শহর তার জায়গা নয়। একটা মস্ত শিউলি গাছে শরৎকালে অজস্র ফুল ফোটে বটে, কিন্তু সেই গাছটার তলায় ডাই হয়ে জমে থাকে আবর্জনা, ময়লা জল। গাছ ফুল ফোটায়, ফুল ঝরায়, কেউ ফিরেও তাকায় না। শুধু আমি লোভির মত চেয়ে থেকে ভাবি এক আঁজলা যদি পাওয়া যেত।
মাঝরাতে অন্ধকার এক জংশনে গাড়ি থেকে নামি। ঘোর অন্ধকার প্লাটফর্ম পেরিয়ে ওপাশে এক অন্ধকার ট্রেনের কামরায় উঠি; একা। ট্রেন ছাড়ে, দুলে দুলে চলে। কোথায় যাচ্ছি তা প্রশ্ন করতে নেই। কেউ জবাব দেবে না। কিন্তু জানিস বকুল, জানালায় তোর মুখ ভেসে ওঠে, করুন তীব্র এক স্বরে তুই বলিস “ পৃথিবী আর সুন্দর থাকবে না যে; ফুল ফুটবে না আর, ভোর আসবে না।” আমি একটু হাসবার চেষ্টা করি, বলি, বড় মারে এরা; বড্ড ভুল বোঝে। প্রত্যাখান করে। তার চেয়ে এই লম্বা ঘুমই ভালো। অনেক দিন ধরে আমি এইরকম ঘুমিয়ে পড়তে চাইছি। 
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
“দুঃখ তোমার কেড়ে নিতে চায় যত
এমন একটা নাছোড়বান্দা ছেলে
সুখের দিনে নাইবা পেলে পাশে
খবর দিও হঠাৎ কান্না পেলে”
পৌনঃপুনিকতা বড্ড বাজে জিনিস; জীবনে কোনো গল্প নেই, জীবনটাকে একটা সরলরেখা হিসেবে চিন্তা করে সময়নিরপেক্ষ যে কোনো একটা অংশ তুলে নিলেই পুরো জীবনের রেপ্লিকা পাওয়া যাবে। কোনো গল্প নেই, কোনো বিশেষ ঘটনা নেই; বড্ড খারাপ।
শহরের কোনো পুকুরের পাড়ে মাটি নেই। সেই গুড়িগুড়ি বৃষ্টির মাঝে আমি বসে থাকবো; একা এবং একাকী। পুকুরের পাশ দিয়ে চলে গেছে কালো পিচ মোড়ানো একটা পথ, সেই পথটাও ফাঁকা থাকবে। আমি বৃষ্টির মাঝে তাকিয়ে দেখবো নীলছাতা মাথায় দিয়ে গুটিগুটি পায়ে কে যেন এগিয়ে আসছে।
মন, অনেক বড় বড় শহর দেখেছো তুমি; সেই সব শহরের ইট পাথর, কথা কাজ আশা নিরাশার ভয়াবহ হৃত চক্ষু আমার মনের বিঃস্বাদের ভেতর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে; কিন্তু তবুও শহরের বিপুল মেঘের কিনারে সূর্য্য উঠতে দেখেছি, বন্দরের ওপারে সূর্য্যকে দেখেছি মেঘের কমলা রঙের ক্ষেতের ভিতর প্রণয়ী চাষার মত বোঝা রয়েছে তার; শহরের গ্যাসের আলো উঁচু উঁচু মিনারের উপরও দেখেছি, নক্ষত্রেরা অজস্র বুনো হাঁসের মত কোন দক্ষিন সমুদ্রের দিকে উড়ে চলেছে। হায় মেঘ, পর্যটক কুমারী মেঘ, তুমি উড়ে গেলে সবুজ কান্না ঝরবে নীলকন্ঠ পাখির চোখে।
এই শহরের কঠিন আস্তরনের উপর ঋতুচক্র তার কেরামতি দেখাতে পারে না। বুড়ো যাদুকরের মত সে ধুঁকতে ধুঁকতে আসে বটে, কিন্তু পরনের ছেঁড়া পাতলুন নোংরা জামা পথে পথে ঘুরে বেড়িয়ে ফিরে যেতে হয় তাকে। এ শহর তার জায়গা নয়। একটা মস্ত শিউলি গাছে শরৎকালে অজস্র ফুল ফোটে বটে, কিন্তু সেই গাছটার তলায় ডাই হয়ে জমে থাকে আবর্জনা, ময়লা জল। গাছ ফুল ফোটায়, ফুল ঝরায়, কেউ ফিরেও তাকায় না। শুধু আমি লোভির মত চেয়ে থেকে ভাবি এক আঁজলা যদি পাওয়া যেত।
মাঝরাতে অন্ধকার এক জংশনে গাড়ি থেকে নামি। ঘোর অন্ধকার প্লাটফর্ম পেরিয়ে ওপাশে এক অন্ধকার ট্রেনের কামরায় উঠি; একা। ট্রেন ছাড়ে, দুলে দুলে চলে। কোথায় যাচ্ছি তা প্রশ্ন করতে নেই। কেউ জবাব দেবে না। কিন্তু জানিস বকুল, জানালায় তোর মুখ ভেসে ওঠে, করুন তীব্র এক স্বরে তুই বলিস “ পৃথিবী আর সুন্দর থাকবে না যে; ফুল ফুটবে না আর, ভোর আসবে না।” আমি একটু হাসবার চেষ্টা করি, বলি, বড় মারে এরা; বড্ড ভুল বোঝে। প্রত্যাখান করে। তার চেয়ে এই লম্বা ঘুমই ভালো। অনেক দিন ধরে আমি এইরকম ঘুমিয়ে পড়তে চাইছি। 
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
আন্তর্জালিক মেঘে জমিয়ে রাখছি <br />আমার সব বাষ্পকণা,<br />এদের সবার নাম দিয়েছি ইচ্ছামৃত্যু |<br /><br />এবং কবির সঙ্গে মেঘেদের যে অসমযুদ্ধ,<br /><br />তাতে জিতে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা দানা বাঁধছে।<br /><br />শুধু টাইপ করা বাকি-<br />"পাতাটি ব্যাক্তিগত অথবা অপসারিত হয়েছে"।<br /><br />“তুই খালি আমারও বই খাতায়
আবারও ভুল করে কাটাকুটি খেলায়
তোর কিছু বানানো নাম ধরে
আমিও ভুল করে দেখে ফেলি তোকে”
আমার জীবনে বিশেষ কোনো দিন নেই, আমার জীবনে সব দিনগুলোই সাধারন, বড্ড বেশি সাধারন। গল্প গুলো বড়ই একঘেয়ে; তারপরেও আমি তোকে বলে যাবো আমার এই সাদামাটা সাধারন জীবনের এক অসাধারন গল্প। সেথায় ময়ুরাক্ষী নদীর গল্প আছে, জোনাকিরা আছে আর খুব বেশি করে আছিস তুই, তোর গন্ধ। 
এইতো সেদিন আমার শহরে এসেছিল বৃষ্টি, কিন্তু তুই হয়তো জানিস না বৃষ্টি খুব হিংসুক, তোর গল্প শোনাতেই তার সে কি রাগ, ভাসিয়ে নিয়ে গেল আমার এতো আদরের চিলেকোঠা, আর চিলেকোঠা ভর্তি তোর গল্পেদের। বৃষ্টি কিন্তু জানেনা, তোর গল্পগুলোকে আমি জমা রেখেছি আমার বাড়ির নেবুগাছ গুলোর কাছে। মাঝরাতে ওদের কাছে আমি তোর গল্প বলি আর ওরা ভিরু চোখে তোর গল্প শুনে যায়; আমার সাধারন জীবনে তুই যে কি ভীষন রকমের অসাধারন তুই জানবি না কখনও। 

আমার শীতের শহরে সবাই যখন কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমোতে ব্যাস্ত, আমি দেখি তুই হেঁটে বেড়াচ্ছিস আমার ময়ুরাক্ষীর তীরে, তারপর ঝাপসা হতে হতে হারিয়ে যাস। এক দমকা বাতাসে ঝরে যায় শিমুলের পাতা গুলো; ওরাও তোকে ফেরাতে পারে না; তুই যে চিরটাকাল বড্ড অবুঝ।
কোনোদিন হেমন্তের রাতে স্বপ্নের সন্ধানে বেরোবেন ঈশ্বর; চাঁদের আলোয় থোকা থোকা স্বপ্নেরা ঝরে পড়বে আমার বাড়ির উঠোনে; মেঘেরা অবাক চোখে দেখবে এক আশ্চর্য্য মেঘবালক ফিরিয়ে দিচ্ছে তার স্বপ্নেদের হাসনুহানাদের কাছে; আমার হারিয়ে যাওয়া কবিতা, আমার নষ্ট জীবন, আমার বেহিসাবি ভালোবাসা, আলোতে হারিয়ে যাওয়া শহর...মেঘলা আকাশের মেঘ হয়ে ফিরে আসবে তোমারই শহরে। এ গল্পও আমি বলে দেবো, শুধু আমার জন্যে পথ চেয়ে তোমার হলদে জানালা খুলে রেখো; আমি প্রবাসি হয়ে মাইলের পর মেইল হেঁটে এসে বলে দেব সব; তোমার চোখ ভরে দিয়ে যাবো আমার একান্ত পলাতক গল্প। 

ভরদুপুরে ফাকা পাবলিক বাসে ঘামের গন্ধের অভাব যখন আক্ষেপ করে তখন আমার কানে সুনিল তার দলবল নিয়ে প্রেমিকার হাতে খুন হওয়া আততায়ীর গল্প বলে। ছিঁড়ে যাওয়া জিন্সের ভেতরে কেটে যাওয়া হাটুতে জমাট বাঁধা রক্ত দেখতে গিয়ে আবিষ্কার করি জীবন হয় সুন্দর। রাতগুলোতে হুটকরে হওয়া মন খারাপ; আমি কতকাল ধরে ভালো নেই! রাত্তিরে বাসি রজনীগন্ধার ঘোরে চুপচাপ আঙ্গুলে মাখিয়ে নিই এইসব ফেরিওয়ালা জীবনের ছড়া কবিতা। কাগুজে লেবুর টকে আটকে থাকে আমাদের যত আলসেমি করা শরীর, অথবা এই রাতগুলো অনেক বছরের পুরোনো। আফ্রিকান সিংহের চোখে দেজাভ্যুর মত স্বপ্ন। আমাদের মন কেমন করা মস্তিষ্কে শুধু ধরে যায় অসুখ। আর আমরা শহরের ভুলভাল নিষিদ্ধ গলিতে চুপচাপ খুঁজে চলি একটা বিশুদ্ধ নিষ্পাপ অর্থময় প্রেম।

বকুল, তুমি জানোনা, শহরের সব প্রবেশ মুখের গিঁট খুলে একবার আমি অরণ্যে গিয়েছিলাম; গাছের শরীরে লিখে এসেছিলাম নগর আর নাগরিক জীবনের আত্মকথা, তাঁবুর দরজা খুলে নির্ভয়ে ঘুমোনোর গল্প। আজ অনেক বছর পর একটা ইমেল পেলাম, সেখানে লেখা আপনি মিথ্যুক।
রোদে ঝরা পাতার দল, বটের ছায়ায় বসে বিষন্ন দুপুর, সবুজ ঘাসের উপর উদাসী বিকেল অনর্থক সব; কষ্টের মত জমানো শীত অনেক পেয়েছি। বকুল, আজকাল আমি আর কবিতা লিখিনা মোটেই, কারন আমি কিছু লিখলেই তার সবটাই তুই হয়ে যাস। আমি তো এমনিতেই নিঃস্ব; আজও বিকেল নামে আমার চিলেকোঠায়, পাখিরা তোমার নামের খরকুটো নিয়ে ফিরে যায়; একটুকরো বিকেলের গায়ে লেপটে থাকা কবিতার বই, তোমার মলাটে রেখে দিলাম ঘাসের ডগার মত দুটো ভালোবাসা; তুমি সহস্র বছরের ইতিহাসে রেখে দিও আমার চুপচাপ অস্তিত্বের বিকেলগুলো।।
“ পাখি ডেকে উঠলো সন্ধ্যেবেলা, আর আমার নির্বাসন শুরু হল;
জ্বলে উঠলো ঝুমুরের ঘরে আলো, বেজে উঠলো হারমোনিয়াম,
একফোঁটা চোখের জল উত্তর কোলকাতা থেকে ফিয়াটে চেপে
গড়িয়ে পড়ল দক্ষিন কোলকাতায়; আমার কি তবে
দরজা খুলে এরকমই চুপচাপ বেড়িয়ে যাওয়া? ভাল,
রাস্তার ছেলে আমি; রাস্তায় মরে পড়ে থাকব একদিন
তোমাদের উৎসবের দিনে, তোমাদের গাড়িবারান্দার নীচে।”

Share
Tweet
Pin
Share
No comments
 ভিজতে ভিজতে যদি<br />একদিন বৃষ্টি হতে পারি..<br /><br />আমায় নিভৃতে নিও কথামেঘ<br /><br />কতই বা আশ্রিত হয়ে বাঁচা যায়..?<br /><br />“হ্যারিকেনের মায়াবী আলোয় শুরু হয়েছিল শৈশব। বাড়িতে রেডিও এলো যখন আমার চোদ্দ বছর বয়স। গ্যাসের উনুন, সে এক ইতিহাস। এক জীবনের মধ্যে আমার কয়েকবার জন্মান্তর ঘটে গেলো। টেলিভিষন, মাইক্রোওয়েভ, কম্পিউটারের ঘেরটোপের মধ্যে বসেও কেন যেন ভ্রমবেশে চমকে উঠি, জীবনের কন্ডাক্টর কেউ কি কেবলই চেঁচিয়ে বলছে , পিছনের দিকে বড্ড এগিয়ে গেছেন স্যার।”

আমি আমার চিলেকোঠার জানালা বন্ধ করে রেখেছি সেই কবে থেকেই; কারন কান্নার শব্দ আমার পছন্দ নয়, তবু ধূসর দেওয়ালের আড়াল থেকে কান্না ছাড়া আর কোনো কিছুরই শব্দ শোনা যায়না। আমি দেখতে পাই মাঝরাতে বাড়ির পাশের পিচঢালা রাস্তাগুলো একে একে নদী হয়ে যাচ্ছে; সেই নদীর ঢেউ গুলো আছড়ে পড়ে আমার শৈশবের চিলেকোঠায়; আমি নেমে পড়ি নদীতে; দেখতে পাই আমাদের স্কুলের হেডমাস্টার অচিন্ত্যবাবু পাথরের মূর্তি থেকে নেমে এসে হেঁটে বেড়াচ্ছেন স্কুলের মাঠে।
“আমি ছেড়ে যাবো একদিন – আমার চেয়ার থেকে নিঃশব্দে উঠে, একদিন
আমি অদ্ভুত নির্বাসনে চলে যাবো; গ্রীষ্মের দুপুরে
কুকুরগুলো ঝিমোতে ঝিমোতে অতীতের কথা ভাবে; আমি জানি না
জানি না আমি, অর্থহীন বারান্দা
শুধু শুধুই জেগে উঠে আমার বুকের ভেতর; হায়, জীবন
আর কিছুই মনে পড়ে না আমার; আমার আর কিছুই মনে পড়ে না...”


আমার মনখারাপ করে অকারনে। ঘুমেরা উড়ে যায় পরিযায়ী পাখি হয়ে দূর পাড়া থেকে আরো দূর বেপাড়ায়; দেখি, একফালি ধানের অজুহাতে খুনসুটি করছে চড়ুই, অচেনা চোখের কোনে জল; আমি খুঁজে বেড়াই আমার না পাওয়া চিঠি। রানারের ঝুমঝুম ঘন্টা বাজা তো সেই কবেই থেমে গেছে; আমি আমার উত্তরের জানালা খুলে দিই, এক দমকা হাওয়া ফিসফিসিয়ে বলে এখনো সময় হয় নি, আমি অপেক্ষা করি, আমাকে পেতেই হবে সেই চিঠি। ভালোবাসা ভরাট করে তোমার শহরে সন্ধ্যে আসে, পৃথিবীর হৃদয় রোমন্থন করে আকাঙ্খার পরিবার পাড়ি দেয় তোমার শহরে; আলোয় লুটোপুটি খায় গোপন স্বপ্নেরা; পৃথিবী ছিদ্র করে বৃষ্টি নামে তোমার শহরে; আমি ভিজলে শুধু আমিই ভিজি, কিন্তু তুমি ভিজলে পুরো শহর ভিজে যায়।
“কেরোসিনের গন্ধে, আবার মনে পড়লো তোমাদের অন্ধকার উঠোন,
কোথায় ট্রেন চলে যাচ্ছে দূরে, আর এই সন্ধ্যেবেলা
আমি একা একা বসে আছি; চেয়ে দেখছি
আমার জানালা, আস্তে আস্তে খুলে যাচ্ছে দু’দিকে,
তোমাদের কাপড়কাচা শেষ হয়েছে এখন?
অনেক বছরের পর, আরও অনেক বছর কীরকম পার হয়ে গেলো,
মনে পড়ছে আজ তোমাদের সাদা বিড়াল ছানাটার কথা, মনে পড়ছে
তোমাদের হাসি, চোখের জল আর তোমাদের।”


দিগন্তে আজও কেউ ঢেউ বুনে যাচ্ছে বিষাদে, প্রবালের পাশে সেই নির্জনতা, নির্বাসনে মেঘ; উপকুলে ক্লান্ত সে নাবিক খুঁজে যায় ফেরার ঠিকানা, পথ ভুল করে ফিরে যায় সুন্দর, কোথা যায় জানা যায় না কিছুতেই। ভারি অচেনা লাগে, মনে হয় পরাজিত, মনে হয় ফতুর! মনে হয় হরতনে নিবেদিত গোলাম, সমুদ্র অচেনা লাগে...একটা ঢেউ কুল পেতে তার কতদিন লাগে?
“ হে ভুতের বাড়ি, তুমি কার জন্যে দাঁড়িয়ে রয়েছো?
কেউ আর আসবে না, কোনোদিন, আসবে না কেঊ।
হে নদী, একলা নদী, একা একা কোথায় চলেছো?
আমি আরো একা, তুমি সঙ্গে নেবে পুজোর ছুটিতে?
হে প্রিয় শহর, তুমি কেন চিঠি লিখোনা প্রত্যহ?
একা একা একা একা কেঁপে উঠি মানুষের দেশে...”


এই সব চিরচেনা দৃশ্যবলি কিছুই দেখবনা আর, ঝুলবারান্দার টবে ফুলের কোলাহল, পাশেরর বাড়ির ছাদ আর সেই ছাদে দাঁড়িয়ে থাকা কিশোরী, আটপৌরে জীবনের সমস্ত বিষন্নতা ঠোঁটে করে উড়ে যায় বিষন্ন চিল; ওর কাছে জমা রাখি আমার জমা খরচ আর পাপ পূন্যের হিসেব; বুঝতে পারি খরচের খাতাটা বড্ড বেশি ভারি, জমা খরচের হিসেব মেলেনা কিছুতেই, কিন্তু এ হিসেব তো মেলবার কথা! ক্রস চেক করি জমার খাতা, দেখতে পাই পাতার এক কোনে লেগে আছে কয়েক ফোঁটা চোখের জল; জমা খরচ সব মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়...
ধিরে ধিরে নদীগুলো আবার পিচঢালা রাস্তা হয়ে যায়, অচিন্ত্যবাবু চশমা হাতে ফিরে যান মাঠ ছেড়ে পাথরের মূর্তিতে; আমার মনে পড়ে যায় রঞ্জিনীর কথা। অচিন্ত্যবাবু সেদিনই শিখিয়েছিলেন ভরের নিত্যতা সূত্র, আমি রঞ্জিনীকে বলেছিলাম আমার আপেল খেতে একদমই ভালোলাগেনা; রঞ্জিনী রেগে গিয়ে বলেছিল সে কারনেই ও আপেল গাছ হবে।
“ সত্যি কি কেউ কষ্ট পায় কারুর জন্য? এই চাপা কান্নার পৃথিবীতে
আমি তোমার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাই।
ভালো করেছো, তুমি নখ আর মুখোশ থেকে সরে গেছো।
তোমার দুচোখের জল হয়তো এখন নিমন্ত্রন করছে মুক্তোকে;
তুমি বেঁচে আছো না মরে গেছো? আদৌ যদি
বেঁচে থাকো, বন্ধু আমার, তুমি কোনোদিন আর ফিরে এসোনা বাড়িতে।”


আমার জানা নেই রঞ্জিনী আপেল গাছ হতে পেরেছে কি না; ট্রাফিক সিগন্যালের লাল আলো আমায় দেখে হাত নাড়ে, আমার বিদায়ী হাত নাড়া দেখে ওরা চোখ বড় বড় করে তাকায়, বুঝতে পারি আমাকে সাথে নেওয়ার কোনো ইচ্ছে ওদের নেই; টেবিল ল্যাম্পের সরলরেখায় আমি আঁকতে বসি ময়ুরাক্ষী নদীর গতিপথ, নদি যে আমায় কোনোদিন ফেরায়নি।।
“ শেষ হল সময়, এবং আমার জীবন।
তেমন কিছু আফশোষ নেই আর।
যদিও দু’চারটে সামান্য কাজ বাকি ছিলো-
যেমন ও পাড়ার সন্ত্রস্ত ছেলেটিকে
একটু ভরসা দিয়ে আসা – ‘ ভয় কিসের?’
যেমন চিঠি লেখা নতুন বন্ধুকে
‘ভুতের বাড়িতে , বেড়াতে আসুন একিদিন
।”
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
আহ!এ সড়কে কোথাও  কোন জীবন নেই তবু শরতের সন্ধ্যা আসে....আমি যখন আকাশ হয়ে যাবো
তোর ঘরের পশ্চিমের জানালাটা দিয়ে যখন একফালি মিষ্টি রোদ এসে পরবে,
তখন জানবি, সেই রোদ্দুরটাই হবে আমার চিঠি!
আর রাতের বেলায় তোর বাড়ির সামনের সাদা বেলী ফুলের গাছটায় যখন শিশির জমবে,
জানবি, সেই শিশিরটাই হবে আমার চিঠি!
আর তোর মনে আছে, আমরা যে কলেজের সবুজ মাঠে কানামাছি খেলতাম!
সেখানে গোধূলি বেলায় দাঁড়ালে দেখবি, একটা দমকা হাওয়া তোর শরীরে আনন্দের ঢেউ বইয়ে দিচ্ছে।
জানবি, সেই দমকা হাওয়াই হবে আমার চিঠি!
আর হ্যাঁ, ময়না পাখিটার কথাতো ভুলেই গেলাম!
সকাল বেলা তোকে না দেখে ময়না পাখিটা যে ময়না, ময়না বলে ডেকে তোকে অস্থির করে দেবে,
জানবি, সেই অস্থির করা ডাকটাই আমার চিঠি!
সেখানে তোদের সব্বার কথা লেখা থাকবে।
আচ্ছা বেশ, তোর কাছেই না হয় প্রথম চিঠিটা লিখবো।
লিখবো--
আমার প্রিয় কবিতা......
আশা করি তুই ভাল আছিস। তোর কথা খুব মনে পরছে। আমি যেখানেই থাকি আমার শুভ কামনা তোর সাথেই আছে। তাই আমাকে কথা দিতে হবে যে তুই ভাল থাকবি। আমার কথা একদম ভাববিনা। কারন, আমি যেখানেই থাকি তুইতো আমার সাথেই আছিস তাইনা?
খুব রাগ হচ্ছেতো? ঠিক আছে আর কিছু বলবনা,তুই ভাল থাকিস।
ইতি,
তোর কুড়িয়ে পাওয়া চিঠি।
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
২০০৫ সালে ডেনিশ কার্টুনিষ্ট জিলান্দ (Jyllands-Posten) যখন মুহাম্মদের ছবি আঁকেন তখন তার বিরুদ্ধে মৃত্যুর পরয়ানা জারি হয়েছিলো।বহুত দেশে জ্বালাও পুড়াও হইছে। কিন্তু তাই বলে কি তার কার্টুন দেখা থেকে পৃথিবীর মানুষকে বিরত রাখা গেছে!? যায় নাই।হুমায়ুন আজাদের বই বেন্ড করে কিংবা তার উপর হামলা চালিয়ে কি পাঠকদের তার বই পড়া থেকে বিরত রাখা গেছে!? যায় নাই। মৌলবাদি ছাগু গুলো Evelyn Beatrice Hall এর সেই বিখ্যাত লাইনটির সাথে কখনোই কি সুর মিলিয়ে বলবে না-

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it"

''মৌলবাদ নিপাত যাক, বাক স্বাধীনতা মুক্তিপাক।''

ডেনিশ কার্টুনিষ্ট জিলান্দ পোষ্টেনের আঁকা সেই বিখ্যাত কয়েকটি কার্টুন-


Share
Tweet
Pin
Share
No comments
ইতিহাস জানতে গিয়ে ভুগোলটা ভুলে গেছি, তবু ঠিকঠাক বাড়ি ফিরে আসি।প্রিয়তি, মাঝরাতে বৃষ্টিরা জানিয়ে দিয়ে গেলো বড্ড বেশি বড় হয়ে গেলাম বড় অবেলায়।  সবাই যখন আদর খুঁজে বেড়ায় মাঝরাতে, আমি আজও খুঁজে বেড়াই আকাশের নীল রং; বুঝতে পারি দখিনা বাতাসের ইচ্ছে অন্য কিছুর; জানালার কাঁচে ঠান্ডা দু’টো হাত জানিয়ে দেয় আর ফেরা যাবে না ফিরতি পথ। ভালো থাকিস তুই নতুন চারা গাছ; এখনও আমি নদী খুঁজি রোজ, দেবদারু গাছেদের কানে কানে রোজ বলি এবার সময় এসেছে নির্বাসনের; একটু একটু করে ভাসান দিচ্ছি তোকে ঘোলা জলে। বৃষ্টির সামনে হাঁটু গেড়ে বসি, দু’হাত পেতে ভিখারির মত বলি “ ফিরিয়ে দে আমার নদী।”


তবুও কেউ জানবে না কখন চুপি চুপি আমি বেঁচে থাকি; এ বাঁচা অন্য রকমের বাঁচা। কখনও অনেক আকাশ যদি পাই , তোকে আনবো; তারপর রাতের আকাশ জুড়ে মা’য়ের ওমের মতই ফুটে উঠবে ভোরের গন্ধরাজ।

প্রিয়তি, একটা একটা করে নদী মুছে যায় রোজ; আবার কার্ণিশে এসে দাঁড়াই, হাতের মুঠি আলগা করে খুল সেই কোন এক সাঁঝবাতি ডুবু ডুবু ভোরে, বৃষ্টি মেখে ভেসে গেছিস কোন সে নদী বেয়ে। তারপর কত কত বৃষ্টিতে ভিজেছি, রোদ মেখেছি দু’হাতে; হিম হিম চাঁদের সাথে কথা বলেছি; এইরকম কিছু কিছু স্বচ্ছ সময় শুধু আমারই থেকে যায়।


অহংকার নেই, জেদ নেই, মান অভিমান নেই, রাগ নেই হিংসে নেই, তুই নেই; তবু কি অবহেলে বলি, আমার তো সবই আছে, কমতি পড়েনি কিছুর। একটা জানালা ছিল, শুধু আজ সেটাই নেই হয়ে গেছে।
এখনও আমি নদী খুঁজি রোজ; দেবদারু পাতাদের কানে কানে বলি, ফিরিয়ে দে আমার নদী। নদী খুঁজি রোজ আনমনে, শহরের পথে পথে, বিসর্জনের সময় এসেছে বোধে-অবোধে। পাঁজরের খাঁচার একটা একটা করে আগল উপড়ে নিচ্ছি রোজ। আর একটু করে তোকে ভাসান দিচ্ছি রোজ। তবুও কেউ জানবে না, এই সব মুহুর্তরা বড্ড বেশি নিঃসঙ্গ। জানিস প্রিয়তি, এইসব মুহুর্তে তোর কথা বড্ড বেশি মনে পড়ে; এইসব মুহুর্তগুলো বড় বেশি করে জানিয়ে দেয় আমি বড়ই একলা; কিন্তু তুই জানিস না, এই একলা থাকার মাঝেও এক আনন্দ আছে, সবার জন্যে তা নয়। তুই একে বলতে পারিস অহংকার, আমি বলি নিজেকে খুঁজে ফেরা; তুইতো জানিস অহংকার ব্যাপারটা আমার একদম আসে না। তারপরেও বলি আমার একটা আকাশ আছে, সে আকাশের রং আজও নীল; সেই আকাশে পরিযায়ি পাখিরা আজও উড়ে বেড়ায়; আক্ষেপ দিয়ে নতুন করে লিখতে চেয়েছি সেই ভুলে যাওয়া নামের বানান। প্রাণপণে ভুলে যেতে চেয়েছি সব। কিন্তু পেরেছি কি? 

আসলে ভুলে যাওয়া নাম কখনোই ভুলতে পারা যায় না। এক অভিমানী বালকের মতো মন তাকেই খুঁজতে থাকে হারানো খেলনা ভেবে। তাই এই শহরের ভিড়ের মধ্যে, রাত্রিবেলা শূন্য পথে, আলোয়, ছায়ায় খুঁজে ফেরা তাকে। ভুলে যাওয়া নাম সংসারের ছায়ার মধ্যে মরে যায়। মরে যায় পাথর চাপা ঘাসের মতো। সত্যিই কি মরে? ভুলে যেতে চাইলেই কি ভুলে যাওয়া নাম বিদায় নেয় জীবন থেকে? না, বিদায় নেয় না। কোনো বৃষ্টি আসি আসি ভোরবেলা, কোনো এক ব্যস্ত দিনে অনেক রোদের মধ্যে, হেমন্তের মরে আসা বিকেলে ভুলে যাওয়া নাম ঝাঁপ দেয় ফিরে। উল্টে যায় পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা পেছনের দিকে।

ভুলে যাওয়া নামের সঙ্গে আর কোনোদিন দেখা হয়নি। তবু নাম ধরে ডাকি, ডাকতে থাকি আড়াল থেকে। জানি, ভুলে ভরা একটা গল্পে নামটাও ভুল হয়, সংশোধনের সুযোগ থাকে না।।


Share
Tweet
Pin
Share
No comments
তোমাকে সাজাতে নয়, এলোমেলো করতে ইচ্ছে করে…আমার হারিয়ে যাওয়া কবিতা ,
আমার নষ্ট জীবন ....
আমার বেহিসাবী ভালবাসা ,
আলোতে হারিয়ে যাওয়া শহর ...
                                                      
মেঘলা আকাশের, মেঘ হয়ে 
ফিরে এসবই তোমার জীবনে ।
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
আমার কিছু গল্প ছিলো, বুকের পাঁজর খাঁমচে ধরে আটকে থাকা শ্বাসের মত গল্পগুলো বলার ছিলো।  সময় হবে? এক চিমটে সুর্য মাখা একটা দুটো বিকেল হবে? ??  গত আশ্বিনে আমি আমার পঁচিশতম জন্মদিন পার হয়ে এলুম। আমি জানি আমি খুব দীর্ঘ্যজীবি হব-আমার কুষ্ঠিতে এমনই লেখা আছে। পঁচিশের ঘরে বসে আমি তাই সামনের দীর্ঘ্য জীবনের দিকে চেয়ে অলস অ ধিরস্থির হয়ে বসে আছি। বিছানায় শুয়ে হাত বাড়ালেই যেমন টেবিলের উপর সিগারেট প্যাকেট, দেশালাই, জলের গ্লাস কিংবা ঘড়ি ছোঁয়া যায় মৃত্যু আমার কাছে ততটা ছোঁয়ার নয়। মাঝে মাঝে জোৎস্নারাতে আমার জানলা খুলে চুপচাপ বসে থাকি। হালকা বিশুদ্ধ চাঁদের আলো আমার কোলে পড়ে। ক্রমে ক্রমে আমার রক্তের মধ্যে ডানা নেড়ে জেগে ওঠে একটি মাছ। শরীর ও চেতনা জুড়ে তাঁর অবিরল খেলা শুরু হয়। আমার চেতনার মধ্যে জেগে উঠে একটি বোধ, আমারই ভেতর থেকে কে যেন বড় মৃদু এবং মায়ার সুরে ডাক দেয়, "সুমন, আমার সুমন।" অকারনে চোখের জল ভেসে যায়। আস্তে আস্তে জানালার চৌকাঠের উপর মাথা নামিয়ে রাখি। মায়ের হাতের মত মৃদু বাতাস মাথা থেকে পিঠ পর্যন্ত স্পর্শ করে যায়। তখন মনে পড়ে- সুমন, তোমার জীবন খুব একার হবে।

তুমি কিছু আশা করেছিলে?
এবার মিটেছে
সেই সব?
তেত্রিশ বছর শেষ হয়ে এলো!
তাহলে এবার?
উদবন্ধন ভালো নয়,
ভালো নয় রেলে মাথা অথবা
ছ'তলা থেকে লাফ;
এসো ধরি টেলিফোন,
হেসে বলো দেখা হবে 
রাস্তায় আবার।

বাদলা দিনে ছোট পৃথিবীটা যেন আদিগন্ত দেখা যায়। মনে পড়ে। বড্ড মনে পড়ে। মনে পড়ে বেঁটে লিচু গাছের বন, পাকা সড়কের উপর ইস্কুল বাড়ি। কিন্তু কি যে যন্ত্রনার ঝড় ওঠে বুকের মধ্যে। হাহাকারের এক বাতাস বয়ে যায়। কী হয়েছিল তারপর? অতীতের বৃষ্টি মাতালের মত টলে টলে পড়ে। দোল খায়। মনে পড়ে লাল ইস্টিশান...

তোমাকে অঞ্জাত দেশে দেখি প্রায়
একটি নির্জন ছাদে দাঁড়িয়ে রয়েছো,
সব কথা 
শেষ হয়ে গেছে।
আর কোনো কথা নেই-স্বপ্ন নেই;
শুধু কিছু দিন আর রাত্রি পড়ে আছে। 

চেনা রাস্তাঘাট আজ আর চেনা যাচ্ছিল না। বিবর্ন দেওয়াল, ছেঁড়া পোস্টার...আমার পায়ের তলা দিয়ে অন্ধকার রেলগাড়ির মত বয়ে চলেছে জল। কাছে আসবার এইতো সুসময়। বর্ষায় বা ঝড়ে বা কুয়াষায়। ভালোবাসায় একাকার হয়ে যায় পৃথিবী, আমাদের চেনা শহরে ফুটে ওঠে অচেনা বিদেশের ছবি। 
আজ রাতে তুমি তোমাদের খোলা জানালার পাশে এসে দাঁড়াবে কি? যদি দাঁড়াও তবে আমার মনে হয়, তুমি টের পাবে তোমাদের বাড়ির চূড়ার শ্বেতপাথরের পরীটা কুয়াশার আড়ালে তাঁর মার্বেলের ভিত ছেড়ে উড়ে গেছে মোড়ের ওই লাল রঙের বেঁটে ডাকবাক্সটার কাছে। এখন পায়ের কোনো শব্দ না করে যদি তুমি ছাদে উঠে যেতে পারো তবে দেখবে-পরীটা সত্যিই নেই।
নাকি রাতের ডাকে চিঠিপত্র চলেগেছে বলে হালকা সেই ডাক বাক্সটা বেলুনের মত উড়ে এসেছে তোমাদের ছাদে। এখন তাই পুরোনো ডাক বাক্সটা খুঁজে না পেয়ে পৃথিবীর মানুষেরা ভাবছে কোথায় গেল এতকালের আমাদের চেনা ডাকবাক্স। না কি আমাদেরই রাস্তা ভুল!

এই সেই ঘর যেখানে তোমার গন্ধ এখনও ভেসে আছে,
সবকিছুই আজ রূপকথা বলে মনে হয়,
রংমশাল, তুমি যা শখ করে জ্বালিয়েছিলে  করে দু'চারদিন
এখনও জ্বলছে-সারাজীবন জ্বলবে, শুধু
আমাকে পুড়িয়ে মারার জন্য।। 
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
কেমন আছো তুমি আমার লেখার ঘর, কেমন আছ তুমি পুকুর, খোলা মাঠ, ফিরবই। পরবাসে ভালো নেই। আমি ভালো নেই। তোদের ছাড়া যে ভালো থাকা যায় না। তোদের ছাড়া কিভাবে ভালো থাকতে হয় একটু শিখিয়ে দিবি!

আমার লেখার ঘর আজ ধুলোয় ভর্তি। স্বপ্নেরা যে যার নিজের মত হেঁটে যাচ্ছে ট্র্যাকে। সবাই ফিরে যাচ্ছে নিজের মত করে, শুধু আমারই আর ফেরা হয় না। আমার যে আজও ফিরে যেতে ইচ্ছে করে তালদিঘীটির কাছে; ওর জলের রঙ কেমন আমার জানা নেই; মাছেরা কি আর আগের মত ঘুরে বেড়ায়?
ঝাপসা কুয়াষায় ট্রাফিক লাইনের ওইপারে আজও কি তুই খুঁজে বেড়াস ডি-অ্যাক্টিভেটেড ভালোবাসা? তোর বৃষ্টি’রা কি আজও পথ হারিয়ে রং-রুটে হেঁটে বেড়ায়?

বকুল, তুই বল, ত্রিকোনামিতির কস থিটা বাই ট্যান থিটা শিখে কে কবে ভালোবাসা খুঁজে পেয়েছে! স্কুলের মাঠে তুই যে দীর্ঘ্যশ্বাস ফেলে এসেছিলি, আজ সেখানে থোকায় থোকায় জোনাকি পোকা ঘুরে বেড়ায় মাঝরাতে; মাঝে মাঝে পথ ভুল করে দু-একটা জোনাকি চলে আসে আমার খোলা জানালায়।
জানিস বকুল, সব কথা বলতে নেই; সবকথা বুঝতেও নেই; “ভালোবাসি” এইটুকুন একটা শব্দ; একবার জেনে গেলে আর বলার থাকে না কিছুই। বয়স কম হল না সময়ের। নিভু নিভু টাইমলাইন ঘিরে অ্যাক্টিভেটেড বিষাদ, চৈত্রের বিকেলের রোদ মুখে ঝলসানি মারে; সাদা মোজা, হাঁটুর উপর থমকে আছে সাদা স্কার্ট; তোর আঠারো বছর বয়সটা ওখানেই লেগে আছে। আমার মানিয়ে নেওয়া অবসরে বেমানান তুই লিখেছিলি “তুই পাগল করতে পারিস এখনও।” আমার সময় এখনও ওখানেই থমকে আছে।

জানিস বকুল, একটা আকাশ লিখতে পারিনি বলে মেঘেরা সব ছেড়ে চলে গেছে; কিছু ভালোবাসার দামে কেনা ছিল স্বপ্ন আমার, অথবা স্বপ্নের দামে ভালোবাসা আমার জানা নেই; শুধু শুয়োপোকা থেকে প্রজাপতি আর রাজহাঁসের শৈশবই কেবল জানে কতটা সত্যি ছিল রূপকথা। সোনার জলে মোড়ানো রূপালি আয়নায় হারানো মনের ছায়ায় চোখ পড়তেই মনে পড়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় চুপকথা, মানুষ মাত্রেই ভুল।

জানিস বকুল, পাখির শিসের বাঁকে বাঁকে যারা জীবনটাকে মিশিয়ে দেয় তাদের কোনো ঘর থাকেনা; তাদের ঠিকানায় কোনোদিন কেউই চিঠিও পাঠায় না। আমার ঘরটা আজোও মাঝরাতে একা একা কেঁদে উঠে, আমি জানি না আমার ঘরের কান্নার কারন। সন্ধ্যে হলে আমি আজও হাঁটতে থাকি; সে কি আমার ঘরে ফেরার চেষ্টা?
প্রতি রাতে টের পাই কারোর নির্লিপ্ততায় ক্ষয়ে যাচ্ছে কিছু, মোমবাতি জ্বেলে বসে থাকি, বুঝতে পারি পাশে কেউ নেই; শুধু আমি আর ছায়া আর...সেই কান্নাটা। বকুল, একদিন দৌড়তে দৌড়তে হঠাৎ খুব করে বুঝতে পারি বড় হয়ে গেছি; হঠাৎ করে বড় হয়ে গেলাম যখন বাড়ির বড়রা ঘুমে অথবা গল্পে মশগুল; হঠাৎ করে খুঁজে পাওয়া রংধনুটা হঠাৎ করেই যেন হারিয়ে গেল, ফিরে গেল বৃষ্টিরা কাউকে কিছুই না বলে। জানিস বকুল আজ খুব ইচ্ছে করে সেই বোকা ছেলেটাকে ফিরে পেতে, সেই বোকা ছেলেটাকে নিয়ে লিখতে; একটা বোকা ছেলের নুতন করে বেঁচে ওঠার গল্প অথবা স্বপ্ন ভঙ্গের গল্প।

আমি চোখ বুজে ভাবতে থাকি একটা মাঠের কথা, একদল দেবদারুর গাছের কথা; সেই গাছের ছায়ার ভাঁজে ভাঁজে আজও তুই লেগে আছিস; এক আনমনা সিঁদুর রঙের রোদ্দুর ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছে তোকে; রং-পেনসিল নিয়ে এঁকে যাচ্ছে তোকে।
আমার খুব হিংসে লাগে, বড় ইচ্ছে ছিল ওই মুখ আঁকব, অপরূপ ভ্রুজোড়া আঁকব; ওই চোখ... এই জনমে আর পারা গেল না। তাই শেয়ালের মত পিপাসা আর তৃষ্ণা নিয়ে তাকিয়ে থাকি ওই চোখের দিকে। জানিস বকুল, যদি জন্মান্তরবাদ কথাটা সত্যি হয় তবে আবার রংতুলি বসব। এক বিকেলে তোর হাতে ঢেলে দেব আমার অবসন্ন ফুসফুস; তোর নখে, আঙ্গুলে কপাল ছাড়িয়ে ছড়িয়ে মাখিয়ে দেব আমার বিকেল;


শুধু তুই কবে আসবি রং-পেনসিল, বিকেল নিয়ে? 
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
অমলটা কবি হতে পারেনি, "প্রতিভা" বাক্সে তালাবদ্ধ করে রেখেছিল এবং রমা রায়, ভালোবেসে কারাবাসী হয়েছিল। আর আমাদের হরিপদ... জীবনের গল্পটা দু'পাতাতেই শেষ করে দিলো..জীবনে কিছু কিছু ঋন আছে যা কোনদিনই শোধ করা যায়না, শুধু স্বীকার করা যায় মাত্র। তোর কাছে               আমি তেমনই একটা ঋনে ঋণি।
একটু সুযোগ দিবি, আমার যে ভীষন মন কেমন করে। কেন এভাবে ঋণি করে দিয়ে গেলি? আজও গাছের ছায়ার ফাঁকে ফাঁকে তোর হারিয়ে যাওয়া ছায়া খুঁজে বেড়াই। আমি যে তোর আকাশটাকে ভালোবেসে ফেলেছি। তোর চলে যাওয়া পথ আজও যে হাতছানি দিয়ে ডাকে। যদি কোনোদিন সুসময় দেখা দেখা দেয়, একদিন ঠিক দেখিস তোর ফেলে যাওয়া পথে আকাশটা কে মিশিয়ে দেবো।
আমার দিগন্ত যে এখনো ভীষন ভীষন ফ্যাকাসে, আমার আকাশটাকে কেন এমন একলা করে দিয়ে গেলি! তোর স্বপ্নেরা কি এখনও সবুজ আছে? কখনো কখনো আমার খুব ইচ্ছে করে তোর স্বপ্নে হানা দিই, মিশিয়ে দিই ইট, কাঠ আর পাথরের শুষ্কতা, কিন্তু আমি পারিনা। তোর স্বপ্নগুলো যে একদিন আমারই ছিল।

চল না একবার তেপান্তরের মাঠে ফিরে যাই, সেখানে আকাশটা কিন্তু আজও নীল আছে। আমায় বলতে পারিস তোর আকাশের রং কেমন?  আমার আকাশটা ভীষন রকম কালো। আমার খুব খুব ভয় করে আজকাল। এই ভয়ের কোনো কারন নেই, কারন ছাড়া ভয় গুলো বুঝি সব থেকে বেশি ভয়ের।

পৃথিবীটা গোল, একদিন দেখা হতে পারেই, তুই কি জানতে চাইবি আমি কেমন আছি? প্লিজ এমন কথা জিজ্ঞেস করিস না। এগুলো ভীষন ভীষন পুরোনো রে। কখনও ভাবিস নি তো! কখনও সময় করে রাতের তারা গুলোর দিকে তাকাস। মিটি মিটি করে ওরা জ্বলছে বুঝি! মোটেই না। ওই গুলিই প্রশ্ন।
ওরা আজকাল আমায় দেখে খুব হাসে; তোর কি আর ফিরতে ভালো লাগেনা? জানিস ফিরে যাওয়ার মাঝে এক অদ্ভুত বিষন্নতা থাকে রে। এই বিষন্নতা কেমন বলা যায় না, শুধুই অনুভব করা যায়। এ এক অদ্ভুত কষ্ট। এই কষ্ট বার বার পেতে ভাল লাগে, তাই তো এই ফিরে আসা।

এই ফিরে আসার মাঝে এক অদ্ভুত মাদকতা আছে। সবাই পারে না।  তুমি ফিরে এসে দেখবে এখানে অনেক গল্প জমে আছে; এই গল্প গুলো তোমার নয়, তারপরেও তুমি ভাববে এই গল্পতো আমারই। এই গল্প তোমার তোমার না। তোমার গল্প চারদেওয়ালের মধ্যে বন্দি। তোমার গল্পে আকাশ কখনই ছিলোনা। বৃষ্টি নেই তোমার গল্পে। নেই জোনাকি। তোর ফেলে যাওয়া পথে নেই কৃষ্ণচূড়ার লাল; আসলে তোর কোনো গল্পই নেই। তোর গল্পেরা হারিয়ে গেছে।
আচ্ছা, একটা গল্প শুনবি? এক বিষন্ন বালকের গল্প। মাঝরাতে নেমে আসতো পরীরা।  জানালা দিয়ে ঢুকে পড়তো বৃষ্টি। মাঝরাতে তার উঠোনে ঝরে পড়তো কুয়াশা। সে এক অদ্ভুত কুয়াশা। সে অদ্ভুত কুয়াশারা রেখে যেত একমুঠো বিষন্নতা তার শিয়রে। তুই দেখিস আজও বুকপকেটে সযত্নে পেলেও পেয়ে যেতে পারিস তোর হারিয়ে যাওয়া গল্প, হারানো বৃষ্টি, হারিয়ে যাওয়া আকাশ।

একবার ফিরে আসিস, তোকে ছাড়া যে আকাশ ভাগ করা যায় না।।  
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
Newer Posts
Older Posts

About me


About Amalie

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Praesent non leo vestibulum, condimentum elit non, venenatis eros.

Follow Us

Labels

Amazing Facts Books Humanity the guardian Travel আমার একলা থাকার সঙ্গী কথাকাব্য কবিতারা নন্দিনীকে বর্ষার কবিতাগুচ্ছ নন্দিনীকে শীতের কবিতাগুচ্ছ নস্টালজিক মন নীলপরীর গল্পেরা প্রিয় মুভি এবং রিভিউ

recent posts

FOLLOW ME @forbestime

Blog Archive

  • ▼  2017 (150)
    • ►  December (35)
    • ►  November (27)
    • ►  October (19)
    • ►  September (4)
    • ►  August (15)
    • ▼  July (11)
      • এক আঁজলা জীবন
      • নন্দিনীকে বর্ষার কবিতাগুচ্ছ
      • চুপচাপ অস্তিত্বের বিকেলগুলো
      • দিগন্তের সাথে আজও দেখা হল না প্রিয়
      • চিঠি
      • মৌলবাদ নিপাত যাক
      • ভুলে যাওয়া নাম
      • আমি
      • নিরুদ্দিষ্ট যুবকের প্রতি
      • তুই কবে আসবি রং-পেনসিল, বিকেল নিয়ে?
      • তোকে ছাড়া যে আকাশ ভাগ করা যায় না
    • ►  June (8)
    • ►  May (31)
  • ►  2016 (25)
    • ►  December (2)
    • ►  March (23)

Created with by BeautyTemplates